সামর্থ্যবান প্রত্যেকের জন্য জীবনে একবার হজ করা ফরজ। খোদ রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও জীবনে তিনবার হজ পালন করেছেন। এরমধ্যে দু’টি ছিল হিজরতের আগে এবং একটি হিজরতের পর। এই হজের (শেষোক্ত) সঙ্গে তিনি ওমরাও পালন করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস: ৮১৫)
হজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এ উপলক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধসহ লাখ লাখ মুসলিম নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। লাখ লাখ মানুষের পুণ্যের এ মহাসম্মেলনে অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। হজ বা ওমরায় গিয়ে কেউ মারা গেলে তার জন্য রয়েছে বিশেষ মর্যাদা।
হজে গিয়ে মৃত্যু নিয়ে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন সুসংবাদ। যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশ্যে বের হলো, এরপর মৃত্যুবরণ করলো, কেয়ামত পর্যন্ত তার জন্য হজের সওয়াব লেখা হবে। আর যে ব্যক্তি ওমরাহর উদ্দেশ্যে বের হলো, আর সে অবস্থায় তার মৃত্যু হলো, কেয়ামত পর্যন্ত তার জন্য ওমরাহর সওয়াব লেখা হবে। (মুসনাদে আবু ইয়ালা ৬৩৫৭)
হজের সফরে মৃত ব্যক্তির জন্য দুঃখ নয়; বরং এটা তার জন্য মহা খুশির সংবাদ। কারণ হজের সফরের মৃত ব্যক্তিকে ইহরামের পোশাকেই দাফন করা হবে। আর কেয়ামতের দিন ইহরামের পোশাকেই তালবিয়া পাঠ করতে করতে সে হাজির হবে।
উল্লেখ্য যে, প্রতি বছরই হজের সময় সৌদি আরবের মক্কা বা মদিনায় অবস্থানকালে অনেক হজযাত্রী মারা যায়। নিয়ম অনুযায়ী হজ করতে যাওয়া কোনো হজযাত্রী মারা গেলে তার লাশ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয় না। আর এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণাপত্রে হজের প্রস্তুতির সময়ে প্রত্যেক হাজিকে সম্মতি দিতে হয়।
হজের সফরে যারা মক্কায় মারা যায় তাদেরকে কাবা শরিফের সন্নিকটে জান্নাতুল মাওলাতে দাফন করা হয়। আর যারা মদিনায় মারা যায় তাদেরকে মসজিদে নববি সংলগ্ন বাকিউল গারকাদে (জান্নাতুল বাকিতে) দাফন করা হয়।
এসব কবরস্থানে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্তান, স্ত্রীসহ অসংখ্য সাহাবায়ে কেরামের দাফন রয়েছে। হজ পালনকারীদের কেউ মারা গেলে তাদের দাফন এসব গোরস্থানে হওয়াও সৌভাগ্যের। আর হাদিসের সুসংবাদ তো রয়েছে।