বেশিক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকলে শুধু ঘাড় নয়, পিঠ ও কোমরেও ব্যথা হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এক জায়গায় বসে থাকলে ঘাড়ের পেশিগুলো স্বাভাবিক স্থিতিস্থাপকতা হারায়। তাই ঘাড়ের পেশিগুলো সচল রাখতে কাজ করতে করতেই ঘাড় কাত করে রাখুন। এতে ঘাড়ের ব্যথা অনেকটাই আপনার থেকে দূরে থাকবে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, ঘাড়ের ব্যথা হলো ঘাড়ের অঞ্চলের অস্বস্তি, যা কশেরুকা, পেশী, টেন্ডন ও লিগামেন্ট দ্বারা গঠিত। ঘাড় ও উপরের মেরুদণ্ড নিয়ে গঠিত জরায়ু মেরুদণ্ড মাথার নড়াচড়া এবং সমর্থনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক -
ঘাড় ব্যথার কারণ:
১. বয়সজনিত সমস্যা: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পেশীর ক্ষয়, ছিঁড়ে যাওয়া, অস্টিওআর্থারাইটিস (জয়েন্টের তরুণাস্থির ক্ষয়) এবং স্পাইনাল স্টেনোসিস (মেরুদণ্ডের সংকোচন) মতো সমস্যা ঘাড়ে ব্যথার কারণ হতে পারে।
২. পেশী টান: ভুল ভঙ্গি, দীর্ঘসময় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার বা অস্বস্তিকর অবস্থায় ঘুমানোর কারণে ঘাড়ের পেশীতে চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা ব্যথার কারণ।
৩. অতিরিক্ত চাপ: অতিরিক্ত মানসিক বা শারীরিক চাপের কারণে ঘাড়ের পেশী শক্ত হয়ে যেতে পারে, যার ফলে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
৪. আঘাত: দুর্ঘটনা বা আঘাতের কারণে ঘাড়ে তীব্র ব্যথা হতে পারে। এতে মেরুদণ্ডের পেশী, লিগামেন্ট, ডিস্ক, জয়েন্ট বা স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে।
ঘাড় ব্যথা কমানোর উপায়:
১. ঘাড় ব্যথা শুরু হলেই প্রথমে মেরুদণ্ড সোজা করে বসে পড়ুন।
২. গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে চাপ দিয়ে পানি ঝরিয়ে সেই ভেজা হালকা গরম তোয়ালে ঘাড় ব্যথার স্থানে সেঁক দিন।
৩. সরিষা তেলে রসুন ও কালোজিরা দিয়ে চুলায় গরম করে নিন। কুসুম গরম থাকতেই সে তেল দিয়ে ঘাড় ও পিঠ ব্যথা স্থানে মালিশ করুন।
৪. এরপর পেশীগুলোতে রক্ত চলাচলের জন্য ১ মিনিটের মতো হালকা ব্যায়াম করুন।
৫. সোজা হয়ে শুয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। এতে করে ঘাড় ব্যথা দ্রুত কমতে শুরু করবে।
৬. কম্পিউটারের সামনে অনেক সময় বসে থাকলে ঘাড় ব্যথা বাড়ে। দীর্ঘ সময় সামনের দিকে না তাকিয়ে কাজের ফাঁকে মাথা নিচের দিকে ঝুঁকিয়ে রাখতে পারেন। কমপক্ষে পাঁচ সেকেন্ড এই ভঙ্গিতে থাকুন। তাহলে ঘাড়ের ব্যথাকে জয় করতে পারবেন অনেকটাই।