এক দিনের ব্যবধানে দামে বড় উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে চলেছে স্বর্ণের বাজার। সোমবার (২ জুন) যেখানে প্রতি গ্রাম ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ১০.৫ দিরহাম বেড়ে দাঁড়ায় ৪০৬.৭৫ দিরহাম।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালেই সেটি ১.৫ দিরহাম কমে নেমে আসে ৪০৫.২৫ দিরহামে। একইসঙ্গে ২২ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ যথাক্রমে ৩৭৫.২৫, ৩৫৯.৭৫ ও ৩০৮.৫০ দিরহামে লেনদেন হয়। খবর খালিজ টাইমস
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের স্পট প্রাইস ছিল প্রতি আউন্সে ৩ হাজার ৩৬১.৬৭ ডলার, যা আগের দিনের তুলনায় ০.৩৫ শতাংশ কম।
বিশ্লেষকদের মতে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দামে যে অনিশ্চয়তা চলছে, তার পেছনে একাধিক ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উপাদান সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।
পেপারস্টোনের রিসার্চ স্ট্র্যাটেজিস্ট ডিলিন উ বলেন, ‘স্বর্ণ এখন একটি রেঞ্জবাউন্ড ট্রেডে আটকে আছে, যার পরিধি ৩ হাজার ১৭০ থেকে ৩ হাজার ৪৩০ ডলারের মধ্যে। তবে সামগ্রিক চিত্রে নিম্নমুখী চাপই বেশি কার্যকর।’
ডিলিন আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ নীতির আইনি বৈধতা নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে এবং কর বিলের ভবিষ্যৎ যে এখনও অনিশ্চিত, তা স্বর্ণকে নিম্ন পর্যায়ে কিছুটা সাপোর্ট দিচ্ছে। তবে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের কড়াকড়ি মনোভাব এবং চীনের স্বর্ণ বিক্রি-এসব কারণ স্বর্ণের দামকে চূড়ান্তভাবে ওপরে ওঠতে দিচ্ছে না।’
অপরদিকে সোমবার বাজারে যে প্রবল উত্থান দেখা যায়, তার পেছনে ছিল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এক্সনেসের ফিন্যান্সিয়াল মার্কেট কনসালটেন্ট ইনকি চো বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন যে, ৪ জুন থেকে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ট্যারিফ দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করা হবে। এই ঘোষণা বাজারে একটা শক তৈরি করে।’
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময়ে, যখন বিদ্যমান ট্যারিফ নিয়ে আইনি বিতর্ক চলছে। এতে বাজারে আবারও ‘সেফ হ্যাভেন’ বা নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে স্বর্ণের প্রতি ঝোঁক দেখা যায়।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা যতদিন থাকবে, ততদিন স্বর্ণের বাজারেও এই অনিশ্চয়তা অব্যাহত থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেড নীতির কঠোরতা যদি বজায় থাকে এবং চীনসহ অন্যান্য প্রধান ক্রেতারা যদি স্বর্ণ বিক্রি অব্যাহত রাখে, তবে সামনের দিনগুলোতে বড় উত্থান নাও দেখা যেতে পারে।