এবছর সিরাজগঞ্জে মাঠের পর মাঠে খিরা আবাদ হয়েছে। উপযোগী আবহওয়া থাকায় খিরার বাম্পার ফলনও হয়েছে। এছাড়া এবার বাজার দর ভালো থাকায় খুশি কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে সারা দেশে এই জেলা থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ টন খিরা। এর মধ্যে অধিক পরিমানে শষা খিরা চাষ হচ্ছে জেলার উল্লাপাড়া উপজেলায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অল্প খরচে বেশি লাভের আশায় কৃষকেরা খিরা চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। চলনবিল অধ্যুষিত উল্লাপাড়া উপজেলাও খিরা চাষের জন্য উপযোগী। এ উপজেলার মোহনপুর, বড়পাঙ্গাসী, উধুনিয়া সলপ সহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে পুরোদমে খিরা চাষ হয়। বিশেষ করে উধুনিয়া মোহনপুর বড়পাঙ্গাসী এ তিন ইউনিয়নে অন্যান্য ইউনিয়নের তুলনায় বেশী খিরা চাষ হচ্ছে। এছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লেখযোগ্য খিরার বড় হাট এখন লাহিড়ী মোহনপুর ইউনিয়নের চরবর্দ্ধনগাছা। এখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খিরা বেচাকেনা চলে। চরবর্দ্বনগাছা খিরার আড়ত সপ্তাহে ৭ দিনই বসে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত খিরা এ হাটে বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররাও আসেন এখান থেকে খিরা কিনতে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত খিরা শষা সহজে এখানে বিক্রি করতে পারছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রাপ্ত প্রনোদন ও কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ আর সহযোগীতায় খিরা চাষে আগ্রহী হচ্ছে উল্লাপাড়ার চাষিরা।
বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের খিরা চাষিরা জানান, চলনবিল অধ্যুষিত এ ইউনিয়নে প্রতিবছরই খিরার বাম্পার ফলন হয়। খিরা চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা আমাদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়া খিরা বিক্রির জন্য সবচেয়ে বড় আড়তটিও আমাদের হাতের নাগালে। আমরা সহজ পরিবহনের মাধ্যমে এ আড়তে খিরা বিক্রি করতে পারি। এতে আমাদের সময় এবং অর্থ বাচে। খিরার অধিক ফলন ভালো দাম এবং বিক্রির সুবস্থা থাকায় আমরা খিরা চাষে লাভবান হচ্ছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আসয়াদ বিন রাহাত খলিল বলেন, এ বছর উল্লাপাড়ায় ৩৪০ হেক্টর জমিতে শষা ও ১০ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ হয়েছে। উপজেলার মোহনপুর বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নে তুলনা মুলক বেশী খিরা চাষ হয়।
কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমী বলেন, উল্লাপাড়া উপজেলা খিরা চাষের উপযোগী। এ উপজেলার মাটিতে অধিকাংশ ফসল ভালো জন্মায় এর মধ্যে খিরা অন্যতম। কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষকদের সর্বপরী সহযোগীতা করা হয়। খিরা চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হয়। এতে কৃষকরা খিরায় উচ্চ ফলন পেয়ে থাকে। দাম ও ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা খিরা চাষে লাভবান হচ্ছে।