জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের হওয়া বহুল আলোচিত মামলার রায় আজ সোমবার ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনাল বেলা ১১টায় বসবে এবং রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)।
এই মামলার তিন আসামি হলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। দুজনই বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। একমাত্র গ্রেপ্তার হওয়া আসামি আল-মামুন ঘটনার দায়িত্ব স্বীকার করে অ্যাপ্রুভার বা রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেবেন। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশন পক্ষ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে। পাশাপাশি তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নিহত পরিবারের সদস্য ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। অপরদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা আসামিদের পক্ষে খালাস চেয়েছেন।
মামলাটিতে মোট ৫৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে নিহতদের পরিবার, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ আরও অনেকে ছিলেন।
রায়কে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন ও বিজিবির সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় পথচারীদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে এবং ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন প্রবেশপথে নিরাপত্তা তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে।
জুলাই ঘটনার মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে করা মামলাগুলোর মধ্যে এটি প্রথম রায়। দেশজুড়ে দৃষ্টি এখন ট্রাইব্যুনালের ঘোষণার দিকে।