হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ক্যালসিয়াম। এর ঘাটতি হলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। শুধু হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় নয় বরং শরীরের বিভিন্ন রোগ সারায় এই খনিজ উপাদান। যেমন- রক্ত জমাট বাধা, পেশির সংকোচন প্রসারণ ও হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখা। তবে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আছে কি না তা বুঝবেন কীভাবে?
ক্যালসিয়াম এক ধরনের খনিজ। যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। শরীরে ক্যালসিয়াম অন্যান্য কার্যক্রমেও সহায়তা করে। যেমন- পেশি, ধমনীর সংকোচন ও স্নায়ুতন্ত্রের বার্তা সরবরাহ করতে সাহায্য করে। হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন অঙ্গেও ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন। শরীরে ক্যালসিয়াম ঘাটতি থাকলে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ে। যার মধ্যে অন্যতম হলো অস্টিওপোরোসিস ও অস্টিওপোনিয়া। ক্যালসিয়ামের অভাবে শিশুদের বিকাশ রোধ হয়। সাধারণত বাচ্চা ও বড়দের মধ্যে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয়, যা একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, ক্যালসিয়ামের অভাবে শারীরে যে সমস্যা দেখা দিতে পারে—
১. অত্যন্ত ক্লান্তি বোধ
ক্যালসিয়ামের অভাবে আপনার শরীরে অত্যন্ত ক্লান্তি ও অলসতা দেখা দিতে পারে। এর ফলে অনিদ্রার সমস্যাও হতে পারে। এ ছাড়া হালকা মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা এবং ব্রেন ফগ হতে পারে, যার ফলে মনোযোগের অভাব, ভুলে যাওয়া এবং বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে।
২. পেশির সমস্যা
ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো— পেমিতে টান ধরা, ব্যথা হওয়া। আর ক্যালসিয়াম পেশি সংকুচিত ও শিথিল করতে সহায়তা করে। এর অভাবে পেশিগুলো তাদের স্বাভাবিক টোন বজায় রাখতে পারে না। সে কারণে পেশির দুর্বলতা, খিঁচুনি ও যন্ত্রণার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. অসাড়তা ও শিহরণ
হাইপোক্যালসেমিয়ার অন্যতম উপসর্গ হলো— হাত ও পায়ে শিহরণ কিংবা ঝি-ঝি ধরা। এ ছাড়া ক্যালসিয়ামের গুরুতর অভাবে শরীরে অসাড়তাও সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের শরীরের প্রতিটি স্নায়ুকোষে এর প্রয়োজন। তাই শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব ঘটলে স্নায়ু কোষগুলো সংবেদনের অনুভূতি এবং সংকেত পাঠাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
৪. রিকেট
ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের অন্যতম অভাবজনিত রোগ হলো রিকেট। এটি মূলত শিশুদের রোগ। ক্যালসিয়ামের অভাব হাড়কে নরম ও দুর্বল করে তোলে। এ ছাড়া এটি হাড়ের স্বাভাবিক গঠনেও বাধা সৃষ্টি করে।
৫.দাঁতের সমস্যা
আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে দাঁতের ক্ষয়, ভঙ্গুর দাঁত, অকালে দাঁত পড়ে যাওয়া, মাড়ির সমস্যা এবং দাঁতের শিকড় দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।