অল্প পরিশ্রম, খরচ কম, অধিক লাভের আশায়, হালচাষ ছাড়াই চলনবিলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে রসুনের আবাদ। এ বিলের পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাদামাটিতে এ চাষ শুরু করেছে সিরাজগঞ্জে তাড়াশ উপজেলার চাষীরা। এখন জেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে রসুন রোপণের ভরা মৌসুম।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সিরাজগঞ্জে মোট রসুন আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০০ হেক্টর।এর মধ্যে বিনা চাষে আবাদ হবে ৪০০ হেক্টর। বর্তমানে বিনা চাষে রোপন করা হয়েছে ১৯৭ হেক্টর আর চাষে আবাদ ১৯৩ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার তাড়াশ উপজেলার মাগুরা বিনোদপুর ইউনিয়নের, নাদৌসৈয়দপুর, চর হামকুড়িয়া গ্রামের শ্রী মুকুল কুমারের ছেলে শ্রী টুটুল কুমার, বিনা চাষে চার বিঘা জমিতে রসুনের কোয়া লাগাচ্ছে। তিনি বলেন, চলনবিলের পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে নরম কাদামাটিতে চাষ ছাড়াই রসুন রোপন করছি । এতে খরচকম, লাভ বেশী হওয়ায় এই বিলের জমিতে চাষ ছাড়া রসুনের আবাদির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, একবিঘা জমিতে ৩ মণ ৫০০কেজী রসুন লাগে। তার দাম ৩৫-৪০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় রসুন আবাদে খরচ হয় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকলে বিঘা প্রতি রসুন পাওয়া যায় ২৫-৩০ মন। রসুন দাম ভালো থাকলে, খরচ বাদে প্রতি বিঘা থেকে লাভ পাওয়া যায় ৪০-৫০ হাজার টাকা। অন্য অন্য আবাদের চেয়ে বিনা চাষে রসুন চাষে লাভ বেশি।
তাড়াশ উপজেলার নাদো সৈয়দপুর,নদী পাড়া গ্রামের আব্দুল হালিম বলেন, এবছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে নরম কাদা মাটিতে লাইন করে রসুন লাগিয়েছেন। রসুন লাগানোর শেষে খড় বিছিয়ে সম্পুর্ণ জমি ঢেকে দেওয়া হয়। রসুনের জমিতে ৬-৭ বার সেচ দিতে হয়। লাগানোর ১৫০-১৬০ দিন পর রসুন উত্তোলন করে ঘরে তোলা যায়।
উপজেলা নাদৌ সৈয়দপুর নদী পাড়া গ্রামের রিজাত আলী ছেলে সাইদুল ইসলাম বলেন,আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ও দাম ভালো পেলে ১ বিঘা জমিতে রসুন লাগিয়ে ৫০-৬০ হাজার টাকা লাভ পাওয়া যাবে।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তাড়াশ চলনবিল এলাকায় বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাদা মাটিতে কৃষক বিনাচাষে রসুন আবাদ করছে। রসুন চাষীদের উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের উপসহকারী কৃষি অফিসাররা সার্বক্ষনিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি কর্মকর্তা আ:জা:মুহা: আহসান শহীদ সরকার বলেন, রসুনের আবাদের ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। বিনা চাষে রসুনের আবাদির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।গত বছরের চেয়ে এ বছর রসুন আবাদের লক্ষ্য মাত্রা বেশী হবে বলে।