বাজারে সিটিগ্রুপকে টপকে শীর্ষে মেঘনা গ্রুফ

ছবি সংগৃহিত।

এক দশক আগেও প্রধান সাতটি নিত্যপণ্য আমদানির ৭৫ শতাংশ ছিল শীর্ষ পাঁচ শিল্প গ্রুপের হাতে। নিত্যপণ্যের বাজারে এই অংশীদারির চিত্র ধীরে ধীরে বদলে গেছে। গুটিকয় শিল্প গ্রুপের হাতের মুঠোয় থাকা নিত্যপণ্যের বাজারে গত কয়েক বছরে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন শিল্প গ্রুপ। তারা এ খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে। এতে ২০২৪ সালে এসে শীর্ষ পাঁচের অংশীদারি ১৫ শতাংশ কমে নেমেছে ৬০ শতাংশে।

নিত্যপণ্যের বাজারে বড় বিনিয়োগ শুরু করেছে কয়েকটি শিল্প গ্রুপ। এই তালিকায় রয়েছে প্রাণ–আরএফএল গ্রুপ, স্মাইল ফুড প্রোডাক্টস ও ডেল্টা এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ। আবার মাহবুব গ্রুপ, এসবি গ্রুপ, আকিজ ইনসাফ, আকিজ রিসোর্সেস ও আকিজ ভেঞ্চারও এই বাজারে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে।

নিত্যপণ্যের বাজারে তীব্র এ প্রতিযোগিতায় শীর্ষস্থানও পাল্টে গেছে গত বছর। একটানা কয়েক বছর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এমজিআই ২০২৪ সালে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। শীর্ষে থাকা সিটি গ্রুপ নেমেছে দ্বিতীয় অবস্থানে। একসময় শীর্ষ পাঁচের মধ্যে থাকা এস আলম গ্রুপ ও বসুন্ধরা গ্রুপও ছিটকে গেছে সেরা পাঁচের তালিকা থেকে।

এই সাত পণ্য হলো সয়াবিন তেল, পাম তেল, গম, চিনি, মটর ডাল, মসুর ডাল ও ছোলা। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব পণ্যের মাত্র ১১ শতাংশ দেশে উৎপাদিত হয়, বাকি ৮৯ শতাংশ আমদানি করতে হয়।

 

বিনিউজ/এম আর

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, নিত্যপণ্যের বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়লে বাজারে সরবরাহ বাড়ে। এতে ভোক্তাদের প্রতিযোগিতামূলক দামে পণ্য কেনার সুযোগ হয়। আবার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য পণ্যের গুণগত মানেও নজর দিতে হয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, ২০২৪ সালে সাত নিত্যপণ্য ও কাঁচামাল আমদানি হয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ টন। এতে ব্যয় হয়েছে ৬৮১ কোটি মার্কিন ডলার। ব্যবসায়ীদের হিসাবে, এসব কাঁচামাল ও পণ্য প্রক্রিয়াজাতের পর পাওয়া গেছে ১ কোটি ৬ লাখ টন নিত্যপণ্য। 

গত বছর এসব পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে শীর্ষে থাকা এমজিআইয়ের বাজার হিস্যা ছিল ১৭ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সিটি গ্রুপের বাজার হিস্যা ১৫ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা টি কে গ্রুপের বাজার হিস্যা ১১ শতাংশ। সব মিলিয়ে এই সাত নিত্যপণ্যের ৮৪ শতাংশ আমদানি করেছে ২১টি শিল্প গ্রুপ। আর আমদানির ৪ শতাংশ ছিল সরকারি খাতে।

শীর্ষস্থানে থাকা মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, ভোগ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাত এখন বৃহৎ শিল্প। নানা ঘাত–প্রতিঘাত পেরিয়ে এবং ধারাবাহিক বিনিয়োগে এই খাতে টিকে থাকা যায়। মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ভোগ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাত ও উৎপাদনে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করেছে।

সিটি গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়েছিল শর্ষে তেলের ছোট্ট কারখানা দিয়ে, ১৯৭২ সালে। দেশে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়তে থাকায় গ্রুপটি ধীরে ধীরে নিত্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতে বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করে। ভোজ্যতেলের কারখানা দিয়ে বিনিয়োগ শুরু হলেও গ্রুপটি পরে চিনি প্রক্রিয়াজাত, সয়াবিনবীজ মাড়াই করে সয়াবিন তেল উৎপাদন ও আটা–ময়দার বৃহৎ কারখানায় বিনিয়োগ করে।

দীর্ঘ সময় শীর্ষস্থানে থাকা সিটি গ্রুপের সিংহভাগ কারখানা ছিল নিত্যপণ্য প্রক্রিয়াজাত ও উৎপাদনের। তবে গ্রুপটি বিনিয়োগে বৈচিত্র্য আনতে তিন বছর আগে কাজ শুরু করে। এতে ভোগ্যপণ্য আমদানিতে কিছুটা ভাটা পড়েছে তাদের।

জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, সিটি গ্রুপ ভোগ্যপণ্যের পাশাপাশি এখন রাসায়নিক, কাগজ, এলপিজি, সিমেন্টসহ বহুমুখী খাতে বিনিয়োগ করছে। এতে ভোগ্যপণ্যের আমদানি কিছুটা কমেছে। তবে বহুমুখী খাতে বিনিয়োগ গুছিয়ে আনায় এখন আবার ভোগ্যপণ্য আমদানি বাড়ছে।

শীর্ষস্থানে উঠে আসা মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ১৯৭৬ সালে কামাল ট্রেডিং কোম্পানি দিয়ে যাত্রা শুরু করে। নিত্যপণ্যের ট্রেডিং দিয়ে শুরু হওয়া গ্রুপটি প্রথম কারখানায় বিনিয়োগ করে ১৯৮৯ সালে। মেঘনা ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ দিয়ে শুরু হওয়া এ বিনিয়োগ পরে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়। 

 


  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

'বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়াই বিএনপির লক্ষ্য'

'লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল প্রমাণ করে যে বিএনপি এশিয়া মহাদেশের সর্ব বৃহৎ সংগঠন'

‘প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই সচিবালয়ে সংকট নিরসনে সিদ্ধান্ত’

নয়াপল্টনে তারুণ্যের সমাবেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল

চারদিনের সফরে জাপান পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

কারামুক্ত হলেন এটিএম আজহার

কুরবানি ঘিরে চুয়াডাঙ্গায় ১ হাজার কোটি টাকার পশু বিক্রির সম্ভাবনা

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী গ্রেপ্তার

মিরপুরে দিনে-দুপুরে গুলি করে ২২ লাখ টাকা ছিনতাই

এটিএম আজহারের রায় নিয়ে যা বললেন আসিফ নজরুল

১০

খালাস পেলেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহার

১১

জামায়াত নেতা আজহারের আপিলের রায় আজ

১২