ফ্রিল্যান্সিং শুরুর পূর্বে এই পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন

ছবি: সংগৃহীত।

বিশ্বজুড়ে ফ্রিল্যান্সিং এখন এক দ্রুত বর্ধনশীল কর্মপদ্ধতি। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম আপওয়ার্ক জানিয়েছে, বর্তমানে দক্ষ জ্ঞানভিত্তিক কর্মীদের প্রায় ২৮ শতাংশই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছেন, আর ৩৬ শতাংশ পূর্ণকালীন চাকরিজীবী শিগগিরই ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত হওয়ার কথা ভাবছেন।

এই প্রবণতার পেছনে অবশ্য কারণও স্পষ্ট। ফ্রিল্যান্সিং আপনাকে দেয় কাজের স্বাধীনতা, সময় বেছে নেওয়া এবং ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ। আপনি আসলে একপ্রকার ছোট ব্যবসার মালিক হয়ে যান, যার মাধ্যমে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কাজের দিক নির্ধারণ করতে পারেন। তবে এই স্বাধীনতার পেছনে যেমন সুযোগ আছে, তেমনি কিছু বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জও রয়েছে।

লক্ষ্য ও পরিকল্পনা পরিষ্কার করুন

প্রথমেই নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। আপনি কি বর্তমান চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি ফ্রিল্যান্সিংয়ে যেতে চান, নাকি আয়ের একটি অতিরিক্ত উৎস হিসেবে এটি শুরু করবেন? এই সিদ্ধান্তটাই নির্ধারণ করবে আপনার ব্যবসার ধরন, ক্লায়েন্ট নির্বাচন, সেবার মূল্য এবং আয়কাঠামো। যদি আপনি আংশিকভাবে শুরু করতে চান, তবে সময় ব্যবস্থাপনা ও কাজের ভারসাম্য রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। আর যদি পুরোপুরি ফ্রিল্যান্সিংয়ে নামতে চান, তবে একটি স্পষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করুন।

 বাজারের চাহিদা বোঝার চেষ্টা করুন

সব দক্ষতার কাজ সব সময় সমানভাবে চাহিদাসম্পন্ন নয়। এখন কোন ক্ষেত্রগুলোয় কাজের চাহিদা বাড়ছে, সেটা জেনে রাখা দরকার। আপওয়ার্ক, ইভার বা লিংকডইনের মতো প্ল্যাটফর্মে ঘুরে দেখুন কোন ধরনের প্রকল্প বেশি পোস্ট হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, সাম্প্রতিক সময়ে ভিডিও এডিটিং, কনটেন্ট রাইটিং, ডেটা অ্যানালিটিকস, ডিজিটাল মার্কেটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) কাজের চাহিদা বাড়ছে। শুধু দক্ষতা থাকলেই হবে না, বাজারে তার চাহিদা কতটা, সেটিও বুঝতে হবে। ক্লায়েন্টের সমস্যার সমাধান দিতে পারলেই আপনি টিকে থাকতে পারবেন।

 পছন্দের কাজ বেছে নিন

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আপনি নিজের কাজ ও সময় বেছে নিতে পারেন। কিন্তু এই স্বাধীনতা তখনই অর্থবহ হবে, যখন আপনি কাজটাকে ভালোবাসেন। শুধু টাকার চিন্তা করে এমন কাজ বেছে নিলে কিছুদিন পরেই একঘেয়েমি চলে আসে। বরং যেটা করতে ভালো লাগে, সেটাতেই নিজের সময় দিন। যেমন লেখালেখি ভালো লাগলে কনটেন্ট রাইটিং বা কপিরাইটিং শিখুন, ডিজাইন ভালো লাগলে গ্রাফিক ডিজাইন বা ইউআই বা ইউএক্স শেখা শুরু করুন। যে কাজ আনন্দ দেয়, সেখানে উন্নতিও দ্রুত হয়।

সময়সীমা ঠিক করুন

অনেকে হঠাৎ চাকরি ছেড়ে ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার হয়ে যান। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আর্থিক প্রস্তুতি থাকা জরুরি। প্রথম দিকে কাজ না-ও পেতে পারেন, তাই অন্তত ৩ থেকে ৬ মাসের জীবনযাপনের খরচ সঞ্চিত রাখুন। যদি এখনই পুরো সময়ের ফ্রিল্যান্সিং সম্ভব না হয়, তবে পার্ট টাইম হিসেবে শুরু করুন।

 ব্যবসার নিয়মকানুন জানুন

ফ্রিল্যান্সিং মানে, আপনি নিজেই নিজের বস। তাই ব্যবসার মৌলিক নিয়মগুলো জানা খুব জরুরি। দাম নির্ধারণ, চুক্তি করা, ইনভয়েস পাঠানো, কর পরিশোধ করা—এসব বিষয় বোঝা দরকার। বাংলাদেশে অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার শুরুতে এসব বিষয়ে অসচেতন থাকেন, পরে সমস্যায় পড়েন। প্রতিটি কাজের শর্ত আগে থেকে লিখিতভাবে (ই–মেইল বা বার্তায়) স্পষ্ট করে রাখুন। সময়মতো কাজ দিন ও ক্লায়েন্টের সঙ্গে পেশাদার আচরণ বজায় রাখুন। নিজের আয়–ব্যয়ের হিসাব রাখুন। প্রয়োজনে কোনো হিসাবরক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন। আপনি যত বেশি সংগঠিত ও পেশাদার হবেন, ক্লায়েন্টদের আস্থা তত বাড়বে।


  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাংবাদিককে তুলে নেওয়ার বিষয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গণভোট নিয়ে কোনো আইন নেই: সিইসি

দিল্লিতে খলিলুর রহমান-অজিত দোভাল বৈঠক

কটন বাড দিয়ে কান পরিষ্কার ক্ষতিকর!

শিশুশিল্পী থেকে রণবীরের নায়িকা, কে এই সারা অর্জুন!

এটা তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা টেস্ট ম্যাচগুলোর একটি হবে

লিবিয়ায় ৩ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার পর সাগরে নিক্ষেপ

ডেঙ্গুতে আরও ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৭৮৮

প্রচারণায় তারেক রহমানের ছবি ব্যবহারে এনসিপির আপত্তি

সঞ্জীব চৌধুরীর প্রয়াণ দিবস আজ

১০

পল্লবীতে যুবদল নেতা কিবরিয়া হত্যা: পাতা সোহেল ও সুজন গ্রেপ্তার

১১

শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন নিশ্চিতে সেনাবাহিনীর সহায়তা প্রয়োজন: প্রধান উপদেষ্টা

১২