চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে লঘুচাপের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। পাশাপাশি নষ্ট হয়েছে মাছের ঘের পুকুর ও মাঠের ফসল।
এছাড়াও উপজেলার হাজারীগঞ্জ ও জাহানপুর ইউনিয়নের খেজুরগাছিয়া গ্রামে লঘুচাপের প্রভাবে বেড়েছে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর পানি। এতে খেজুরগাছিয়া বেড়িবাঁধটিতে ভাঙনে লোকালয়ে পানি প্রবেশের ঝুঁকিতে রয়েছে।
গত তিন দিনের বৃষ্টি ও মেঘনায় অতি জোয়ারের চাপে পাউবোর বেড়িবাঁধের প্রায় ৩শত ফুট এলাকায় এ ফাটল দেখা দেয়ায় আতঙ্কে রয়েছে দুইটি ইউনিয়নের লক্ষাদিক গ্রামবাসী।
জানা যায় ঘুর্ণিঝড় শক্তির আঘাতে ভাঙ্গণ দেখা দিলেও জরুরী মেরামতের বরাদ্ধ হয়। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ তাৎক্ষণিক জিও ব্যাগ ফেলে ব্যবস্থা নেয়া হলে বাঁধটি এতো দ্রুত ভেঙে যেতো না। এখন পর্যন্ত বাঁধ ভেঙে গ্রামে পানি না ঢুকলেও আগামী দুই একদিনে এ বাঁধটি সম্পূর্ণ ভেঙে যাবে।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা জানান দ্রুত সংস্কার না করলে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটি ভেঙ্গে গ্রামে পানি প্রবেশ করবে। এতে ঝুঁকির মধ্যে থাকবে দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ।’ স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড চোখ দেখানো বালির বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলে সংস্কার করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই বাঁধটিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ টেকসই ব্লক ফেলে রক্ষা করা না হলে লক্ষ বাসিন্দা মেঘনার ভাঙনের শিকার হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও ঠিকাদার যেন সরকারি বরাদ্ধ তছরুপ না করে টেকসই বাঁধ নির্মান করে সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান। স্থানীয় বিএনপি নেতা হাজি গিয়াস উদ্দিন বলেন, গত শুক্রবার হটাৎ লঘুচাপের প্রভাবে মেঘনায় পানির চাপ বৃদ্ধি পেলে বেড়িবাঁধের মাটি ধসে গিয়ে বড় আকারে ফাটল দেখা দেয়। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে জিও শিট দিয়ে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়। শনি ও রবিবার দুইদিন ধরে বেড়িবাঁধটি সংস্কারের কাজ করছে শ্রমিকরা।
চরফ্যাশন উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা জানান, গত জুন মাসে খেজুর গাছিয়া এলাকায় ২৫০ মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর জরুরি ভিত্তিতে ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
গত শুক্রবারের জোয়ারে বাঁধটির প্রায় ৯০ শতাংশ আবারও ভেঙে যায়। ওইদিন রাতেই উপজেলা প্রশাসনসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুই ঠিকাদারকে বাঁধ নির্মাণ কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা সংস্কারের কাজ অব্যাহত রয়েছে। বেড়িবাঁধ রক্ষায় দুইটি প্যাকেজে কাজ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধটি স্থায়ীভাবে সংস্কার করা হবে।