কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে উপকারী যেসব খাবার

ছবি সংগৃহীত।

কোলন ক্যানসার বিশ্বের অন্যতম সাধারণ এবং প্রতিরোধযোগ্য ক্যানসারগুলোর একটি। যদিও আগে এটি প্রধানত ৫০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে বয়সীদের মধ্যে দেখা যেত, এখন ২০–৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যেও এই রোগের হার বাড়ছে। সময়মতো স্ক্রিনিং এবং সচেতন জীবনধারা মেনে চললে এই ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

আপনার প্রতিদিনের খাবার ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে বা বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখে। চলুন জেনে নিই কোন খাবার ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক এবং কোনগুলো ঝুঁকি বাড়ায়।

 

যেসব খাবার কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক

১. ডেইরি পণ্য: দুধ, দই, পনির ইত্যাদি ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার কোলনের কোষকে রক্ষা করতে সহায়ক। এতে থাকা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সম্ভাব্যভাবে ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করে।

২. ফুল-গ্রেইন বা সম্পূর্ণ শস্যজাতীয় খাবার: ব্রাউন রাইস, ওটমিল, কোয়িনোয়া ও হোল হুইট ব্রেডে রয়েছে প্রচুর ফাইবার ও ম্যাগনেশিয়াম। এগুলো পাচনতন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং ক্যানসার সৃষ্টিকারী পদার্থ দূর করতে সহায়ক।

৩. ডাল ও লেগিউমস: মসুর, ছোলা, সয়াবিন ইত্যাদি ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন বি ও ফ্ল্যাভোনয়েডে ভরপুর। এই উপাদানগুলো কোষের ক্ষয় রোধ করে এবং টিউমার গঠনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।

৪. ফল ও সবজি: ব্রকলি, গাজর, ক্যাপসিকাম, পালং শাক, কমলালেবু ও স্ট্রবেরির মতো ফল ও সবজিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার ও ফাইটোকেমিক্যাল, যা কোষের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৫. ওমেগা-৩ যুক্ত মাছ: স্যালমন, সারডিন ও ম্যাকারেল জাতীয় মাছ প্রদাহ কমাতে সহায়ক ও ক্যানসার কোষের বৃদ্ধিতে বাধা দিতে পারে। তবে পারদযুক্ত মাছ যেমন: শার্ক, সোর্ডফিশ, টাইলফিশ—এড়িয়ে চলা ভালো।

 

যেসব খাবার কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়

১. লাল মাংস: গরু, খাসি, শুকরের মাংস বেশি খেলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। বেশি তাপে রান্না (গ্রিল বা ফ্রাই) করলে ক্ষতিকর যৌগ তৈরি হয়।

২. প্রক্রিয়াজাত মাংস: হটডগ, সসেজ, বেকন, ডেলি মিট ইত্যাদি ধূমায়িত বা কেমিক্যাল প্রিজারভেটিভে সংরক্ষিত হওয়ায় এগুলোর ক্যানসার ঝুঁকি অনেক বেশি।

৩. অতিরিক্ত অ্যালকোহল: নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি ২০–৪০% পর্যন্ত বাড়াতে পারে। প্রতিরোধের জন্য অ্যালকোহল কমানো বা সম্পূর্ণ পরিহার করা উত্তম।

গবেষণাধীন কিছু খাবার:

কফি, চা, রসুন, আলু, ও চিনিযুক্ত খাবারের প্রভাব নিয়ে গবেষণা চলমান। এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু বলা না গেলেও, এই খাবারগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

আপনার খাদ্যতালিকায় বেশি করে ফল, সবজি, ডাল, ফুল-গ্রেইন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি যোগ করুন। পাশাপাশি লাল মাংস, প্রসেসড ফুড ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।

 

কোলন ক্যানসার: কী ও কীভাবে হয়

কোলন বা বৃহৎ অন্ত্রে ছোট পলিপ তৈরি হয়ে ক্যানসার শুরু হয়। এই পলিপগুলো অনেক সময় ধরে বাড়তে বাড়তে ক্যানসারে রূপ নিতে পারে। যদি তা সময়মতো ধরা না পড়ে, তবে এটি অন্ত্রের দেয়াল ভেদ করে লসিকা বা রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

লক্ষণসমূহ:

* পায়খানায় রক্ত যাওয়া

* হঠাৎ বাওয়েল হ্যাবিট পরিবর্তন

* পেটব্যথা, গ্যাস বা ফাঁপা

* অকারণ ওজন কমে যাওয়া

* অতিরিক্ত ক্লান্তি

* বমি ভাব

প্রাথমিক পর্যায়ে উপসর্গগুলো হালকা থাকতে পারে, তাই নিয়মিত স্ক্রিনিং যেমন কলোনোস্কোপি করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কোনো ডায়েট ক্যানসার প্রতিরোধে শতভাগ গ্যারান্টি দিতে না পারলেও, বিজ্ঞানসম্মত ও সুষম খাবার আপনার অন্ত্র ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের পক্ষে বড় এক সুরক্ষা-ব্যুহ গড়ে তুলতে পারে।


  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঈশ্বরদীতে মারামারি ঘটনার জেরে ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা ভাঙচুর লুটপাটের অভিযোগ

কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়া এনসিপির ৫ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

নির্বাচনের সময় এসপি-ওসিদের বদলি হবে লটারির মাধ্যমে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশে স্বর্ণ ও রুপার আজকের বাজারদর

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসি

একসঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৭৬ কর্মকর্তাকে বদলি

কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে উপকারী যেসব খাবার

‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ অধ্যাদেশ জারির দাবিতে ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

৯০ লাখ বছর আগে যেভাবে জন্ম নিয়েছিল আলু

জুলাই ঘোষণাপত্র ও নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি

১০

ব্রাজিল সমর্থকদের সুখবর দিলেন নেইমার

১১

আবু সাঈদ হত্যায় অভিযোগ গঠনের আদেশ আজ

১২