সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার প্রান্তিক জনগণের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে উপজেলা সমাজসেবা অফিস। সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় উপজেলার অসহায়, দরিদ্র, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী জনগণ নিয়মিতভাবে পাচ্ছেন বিভিন্ন ভাতা ও উপবৃত্তি। ফলে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রায় এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উল্লাপাড়া উপজেলায় মোট প্রায় ৩৬ হাজার সুবিধাভোগী সরকারি ভাতা ও উপবৃত্তির আওতায় রয়েছেন। এর মধ্যে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ১৮ হাজার ৯৬২ জন, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা পাচ্ছেন ৭ হাজার ২৬৯ জন, প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন ৯ হাজার ৩১০ জন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি পাচ্ছেন ২৮৫ জন, হিজড়া সম্প্রদায়ের ভাতা পাচ্ছেন ১৫ জন, এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ৫০ জন পাচ্ছেন বিভিন্ন উপবৃত্তি ও সহায়তা।
সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন ইউনিয়নে মাঠকর্মীদের মাধ্যমে নতুন নতুন সুবিধাভোগী চিহ্নিত করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য হুইলচেয়ার, শ্রবণযন্ত্র ও শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর শিশুদের বিদ্যালয়ে ভর্তির হারও বেড়েছে সমাজসেবা অফিসের উদ্যোগে।
সচেতনরা বলছেন, সমাজসেবা অফিসের নিয়মিত কার্যক্রমের ফলে উপজেলার দরিদ্র মানুষেরা এখন আত্মনির্ভরতার পথে এগোচ্ছে। সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি শুধু আর্থিক সহায়তাই নয়, এটি এখন গ্রামীণ সমাজে নিরাপত্তা ও মানবিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসের উদ্যোগে বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীসহ সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সরকারি সেবার আওতায় আসায় দারিদ্র্য বিমোচনে সৃষ্টি হয়েছে নতুন দিগন্ত। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষ এখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছেন, সরকার ও সমাজসেবা অফিসের এই সহায়তা তাদের জীবনে এনে দিয়েছে নতুন আলো।
উল্লাপাড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, উল্লাপাড়াকে একটি দারিদ্র্যমুক্ত, মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা এমন একটি সমাজ গড়তে চাই, যেখানে কেউ আর অভাব-অনটনে কষ্ট পাবে না এবং প্রতিটি নাগরিক সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আসবে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে এই সেবার আওতায় আনা হবে।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, উল্লাপাড়া উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ৩৬ হাজার সুবিধাভোগী সরকারি বিভিন্ন ভাতা ও উপবৃত্তির সুবিধা পাচ্ছেন। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে উপজেলার মানুষের জীবনযাত্রার মানে দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে, যা দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তিনি আরও বলেন, সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রণয়ন ও তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম যেন না ঘটে, সে বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিতরাই যেন সরকারি সহায়তা পান।
ইউএনও হাসনাত আরও জানান, “কোনো নাগরিক যদি সেবা পেতে সমস্যা বা অনিয়মের মুখোমুখি হন, তাহলে সরাসরি আমার দপ্তরে এসে জানালে আমি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করি। জনগণের কল্যাণে সরকারের এই উদ্যোগ শতভাগ সফল করতে আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করছি।