হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ভারতের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী সুলক্ষণা পণ্ডিত। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। বরেণ্য গায়িকার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার ভাই ও সংগীত পরিচালক ললিত পণ্ডিত।
শিশুশিল্পী হিসেবে বলিউডে পা রেখেছিলেন সুলক্ষণা। ১৯৬৭ সালে ‘তকদির’ ছবিতে তার ‘সাত সমুন্দর পার সে’ গান ব্যাপক জনপ্রিয় হয়।হিন্দির পাশাপাশি, বাংলা, মারাঠি, ওডিশা, গুজরাটিসহ একাধিক ভাষায় গান গেয়েছেন তিনি। ১৯৮০ সালে তার গাওয়া অ্যালবাম ‘জজবাত’ বেশ জনপ্রিয়তা পায়। গজল শিল্পী হিসেবেও তিনি ছিলেন পরিচিত নাম।
১৯৭৫ সালে সঞ্জীব কুমারের বিপরীতে ‘উলঝন’ দিয়ে অভিনয় শুরু করেন।
সিনেমায় কাজ করার সময় সঞ্জীব কুমারের প্রতি তার একতরফা ভালোবাসা তৈরি হয়। কিন্তু সঞ্জীব তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ, তিনি হেমা মালিনীকে হারানোর বেদনা কাটিয়ে উঠতে পারেননি। ভালোবাসা না পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সুলক্ষণা। তার কিছু বছর পর ১৯৮৫ সালে সঞ্জীব কুমারের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি গায়িকা ও অভিনেত্রী। সঞ্জীবের মৃত্যুর পর আর বিয়ে করেন তিনি। শেষ জীবনে তিনি বোন বিজয়তা পণ্ডিত ও প্রয়াত ভগ্নিপতি আদেশ শ্রীবাস্তবের পরিবারের সঙ্গে থাকতেন।
সাত ও আটের দশকে একাধিক হিন্দি ছবিতে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘সংকোচ’, ‘হেরাফেরি’, ‘আপনাপন’, ‘খানদান’, ‘চেহরে পে চেহরা’, ‘ধর্মকান্তা’ এবং ‘ওয়াক্ত কি দিওয়ার–এ তার অভিনয় আজও সিনেমাপ্রেমীদের মুখে মুখে ফেরে।
এর বাইরে বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেছেন সুলক্ষণা। ১৯৭৮ সালে উত্তম কুমারের বিপরীতে অভিনয় করেন ‘বন্দী’ ছবিতে। তার কাজ সমালোচক মহলে ব্যাপক প্রশংসাও কুড়িয়েছিল।
জিতেন্দ্র, রাজেশ খান্না, বিনোদ খান্না, শশী কাপুর ও শত্রুঘ্ন সিনহার বিপরীতেও একাধিক ছবিতে কাজ করেছেন সুলক্ষণা।
১৯৮৬ সালে লন্ডনের রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে আয়োজিত ‘ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়ান মিউজিক’ কনসার্টে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন সুলক্ষণা। তিনি কিশোর কুমার, হেমন্ত কুমার, মোহাম্মদ রফি, শৈলেন্দ্র সিং, যেসুদাস, উদিত নারায়ণসহ খ্যাতনামা শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন।