দিনভর বিক্ষোভে উত্তাল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। দাবি পূরণ না হওয়ায় ৭টি একাডেমিক ভবন ও ১টি প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় একাডেমিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
হামলাকারীদের শাস্তি, উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবিতে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। হয়নি কোনো ক্লাস-পরীক্ষা। দুপুর ১টার মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় ৭টি একাডেমিক ভবন ও একটি প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কুয়েট উপাচার্য এখনো অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে সকাল থেকেই অনেক শিক্ষার্থী হলত্যাগ করতে শুরু করেছেন। ক্যাম্পাসের বাইরে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে যাঁরা ভাড়া রয়েছেন তাঁদের ভেতরে ভয় এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরাও রয়েছেন উদ্বিগ্ন।
দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ছাত্রদল। তাদের অভিযোগ, বরং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে তাদের কর্মীদের মারধর করা হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান মো. ইয়াহিয়া বলেন, ছাত্রদল কারও ওপর হামলা করেনি।
এদিকে, সিন্ডিকেট সভার পর বিকেল সোয়া ৪ টায় শিক্ষার্থীরা প্রেস ব্রিফিং করেছে। এ সময় ৬ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় কুয়েটের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালককে বর্জন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, এখন থেকে এই তিন পদে কেউ নেই। এই তিন পদে নতুন নিয়োগের জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আজ প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসের হলে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
কুয়েটের সিন্ডিকেট সভায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। হামলায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার, বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মামলা, আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। কুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরিফুল আলম সিন্ডিকেট সভার এসব সিদ্ধান্তের সত্যতা স্বীকার করেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি নর্থ মো. নাজমুল হাসান রাজীব জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়নি এখনও। ক্যাম্পাসের গেটে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।