বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধিত) অধ্যাদেশ–২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। কিন্তু এই খসড়া নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক, ইউনিয়ন গঠনের শর্ত শিথিলতায় কারখানার মালিক ও শ্রমিক—দু’পক্ষকেই বিস্মিত করেছে।
ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (টিসিসি) আলোচনায় ইউনিয়ন গঠনের জন্য শ্রমিকদের ন্যূনতম অংশগ্রহণের নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণে ঐকমত্য হয়েছিল। কিন্তু নতুন খসড়ায় সেই সীমা আরও কমিয়ে আনা হয়েছে। খসড়া অনুযায়ী, এখন ২০ থেকে ৩০০ শ্রমিকের কারখানায় মাত্র ২০ শ্রমিকের সম্মতিতেই ইউনিয়ন গঠন করা যাবে। আগে যেখানে প্রয়োজন ছিল মোট শ্রমিকের ২০ শতাংশের সমর্থন।
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ বলছে, এত সহজ শর্ত কারখানায় বিভ্রান্তি ও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। তাঁদের দাবি, টিসিসির আলোচনায় গৃহীত প্রস্তাবই কার্যকর করা হোক।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, যদি টিসিসির সিদ্ধান্ত না মানা হয়, তাহলে বর্তমান ২০ শতাংশের নিয়মই আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য।
অন্যদিকে শ্রমিক নেতারা বলছেন, শ্রম অধিকার রক্ষার জন্য আইন হালনাগাদ জরুরি, তবে ২০ শ্রমিকের সীমা অতি কম- এতে ভুয়া ইউনিয়ন গঠনের ঝুঁকি থাকবে।
নতুন খসড়ায় ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়াও শ্রমিকবান্ধব কিছু প্রস্তাব- যেমন নতুন মজুরি বোর্ড গঠন ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারের কথা বলা হয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই শেষে এটি রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। সংসদ অধিবেশন না থাকায় এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে। শ্রম অধিকার ও বিনিয়োগ–দু’দিকেই ভারসাম্য আনার চেষ্টায় সরকার থাকলেও—ইউনিয়ন গঠনের এই নতুন শর্তই এখন শ্রম আইনের সবচেয়ে বিতর্কিত অংশ হয়ে উঠেছে।