বিশ্ব অর্থনীতির ওপর বাণিজ্যযুদ্ধের কালো ছায়া, অপরিশোধিত তেলের বাড়তি সরবরাহ এবং ক্রমাগত কমে আসা ভোক্তা আস্থায় ভয়াবহভাবে কেঁপে উঠেছে বৈশ্বিক তেলবাজার। এপ্রিল মাস শেষ হতে না হতেই ব্রেন্ট তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৪ শতাংশের বেশি কমে গিয়ে রেকর্ড পতন দেখিয়েছে, যা গত প্রায় চার দশকে এই সময়ে দেখা যায়নি। খবর গালফ নিউজ
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) পর্যন্ত ব্রেন্ট তেলের দাম নেমে এসেছে ব্যারেলপ্রতি ৬৪ ডলারের কাছাকাছি। অপরদিকে, ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ৬০ ডলারের নিচে অবস্থান করছে, যা চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এদিকে, আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিক অপরিশোধিত তেলের মজুত বেড়েছে ৩.৮ মিলিয়ন ব্যারেল।
অন্যদিকে ওপেক+ জোটও তাদের উৎপাদন সীমা শিথিল করার পথে। জেপি মরগ্যান সতর্ক করে বলেছে, সামনের সপ্তাহে ওপেক+ বৈঠকে দ্রুত সরবরাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এতে বাজারে তেলের সরবরাহ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে চীনের ওপর ধারাবাহিক নতুন শুল্ক আরোপ বিশ্ববাজারে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। এতে বিশ্বব্যাপী শিল্প উৎপাদন কমে গিয়ে জ্বালানির চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে।
তেলের বাজারে চাপে বাড়তি ভয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে রাশিয়ার রপ্তানি প্রবণতা। নিষেধাজ্ঞায় আটকে পড়া ট্যাঙ্কারগুলোর প্রায় অর্ধেক এখন আবার রাশিয়ার তেল পরিবহনে যুক্ত হয়েছে। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত দেশটির রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৩.২৬ মিলিয়ন ব্যারেলে, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি।
বিশ্ব অর্থনীতিতে এমন নড়বড়ে অবস্থায় তেলের বাজার আরও কতটা চাপ সইতে পারবে, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বিনিয়োগকারী মহলে।