জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্তের এক দশক পর বাংলাদেশে জিকা ভাইরাসের ক্লাস্টার (গুচ্ছ) সংক্রমণ, অর্থাৎ একই এলাকার পাঁচ ব্যক্তির সংক্রমণের বিষয়টি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
সোমবার (৩ মার্চ) সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এসংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়েছে।
আইসিডিডিআর,বির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে সংগ্রহ করা নমুনা পর্যালোচনা করে এ তথ্য পেয়েছেন তারা। বিজ্ঞানীরা সমগ্র জিনোম সিকোয়েন্সিং এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণ ব্যবহার করে প্রকাশ করেছেন যে, বাংলাদেশি এই স্ট্রেইন এশিয়ান লাইনেজের অন্তর্গত। এতে আক্রান্ত হলে মাইক্রোসেফালি ও অন্যান্য স্নায়বিক রোগের মতো গুরুতর সংকট দেখা দিতে পারে।
আইসিডিডিআর,বি তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে জানিয়েছে, বাংলাদেশের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু, এর উষ্ণ তাপমাত্রা এবং দীর্ঘ বর্ষাকাল এডিস মশার জন্য সর্বোত্তম প্রজনন পরিস্থিতি তৈরি করে। এ কারণে মশাবাহিত অনেক রোগ হয়।
ডেঙ্গু ছাড়াও এখানে চিকুনগুনিয়া দেখা গিয়েছিল। ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় জিকা ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়, তবে তা বানরের শরীরে। এরপর ১৯৫২ সালে প্রথম মানবদেহে শনাক্ত হয়। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের অনেক দেশে।
জানা গেছে, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার মতো জিকাও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। এর লক্ষণ ডেঙ্গুর মতো হলেও আশি শতাংশের ক্ষেত্রেই তা ধরা পড়ে না। ভাইরাস শরীরে থাকে বছর ধরে। এমনকি জিকা ভাইরাসে আক্রান্তের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও ছড়ায় এই রোগ। জিকা আক্রান্ত হয়ে গর্ভবতী হলে অথবা গর্ভবতী জিকা আক্রান্ত হলে নানা শারীরিক ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেয় শিশু।
ক্লাস্টার সংক্রমণের বিষয়ে আইসিডিডিআর,বি বলছে, গবেষকেরা ২০২৩ সালে তাদের ঢাকার রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে আসা রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করেন। জ্বর আক্রান্ত ১৫২ জন রোগীর শরীরে জিকার লক্ষণ রয়েছে এমন সন্দেহে তাদের নমুনা পিসিআরভিত্তিক পরীক্ষা করা হয়। এতে পাঁচজনের নমুনায় জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়।