সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেন লালনসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীন। তবে বাসায় ফিরলেও তাকে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। গতকাল শুক্রবার রাতে ফরিদা পারভীনের বাসায় ফেরার খবরটি নিশ্চিত করেছেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
দেশের বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন গুরুতর অসুস্থ হয়ে ১ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হন। তার ফুসফুসে পানি জমার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও থাইরয়েডজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। অবস্থার অবনতি হলে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়ার পর ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং পরে সাধারণ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ১৩ দিন পর তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
চিকিৎসক আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানান, প্রথমদিকে তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা শঙ্কাজনক ছিল। তবে চিকিৎসার ফলে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। চিকিৎসার এক পর্যায়ে তার ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল, তবে শেষ পর্যন্ত সেটি আর লাগেনি। চিকিৎসকরা তাকে একটি গাইডলাইন দিয়েছেন, যা কঠোরভাবে মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। না হলে ভবিষ্যতে নতুন কোনো জটিলতা দেখা দিতে পারে।
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত গাইতে শুরু করেন ফরিদা। ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে ফরিদা পারভীন লালনসংগীতে তালিম নেন।
ফরিদা পারভীন ১৯৮৭ সালে সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পান। এ ছাড়া ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন। সেরা প্লে-ব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে।
শিশুদের লালনসংগীত শিক্ষার জন্য ‘অচিন পাখি স্কুল’ নামে একটি গানের স্কুল গড়ে তুলেছেন তিনি।