১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মধ্যদিয়ে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন সালমান শাহ্। মাত্র ৪ বছরের ক্যারিয়ারে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ২৭টি সিনেমা। যার সবগুলো ছিল সুপারহিট।
অমর এই নায়কের চলে যাওয়া কি স্বাভাবিক মৃত্যু? আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড? তা আজও রহস্য।
তবে ক্ষণজন্মা এই নায়কের পরিবার মনে করে, এটি স্বাভাবিক কোনো মৃত্যু ছিল না। পরিকল্পিতভাবে ‘হত্যা’ করা হয়েছে সালমান শাহকে, এমন অভিযোগ এনে সালমানের মা নীলা চৌধুরী আইনের আশ্রয়ও নিয়েছেন। তাঁর অভিযোগের আঙুল, সালমানের স্ত্রী সামিরার দিকে।
১৯৯২ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে খালার বান্ধবীর মেয়ে সামিরা হককে বিয়ে করেছিলেন সালমান শাহ, যাঁর পুরো নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। সামিরা ছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরার মেয়ে এবং বিউটি পারলার ব্যবসায় জড়িত। সালমানের দুটি সিনেমার পোশাক পরিকল্পনাতেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন। সিনেমায় স্টাইল ও ফ্যাশন বিষয়ে সালমান প্রায়ই তাঁর পরামর্শ নিতেন।
সালমান কেন আত্মহত্যা করবেন? প্রথম স্বামী সালমান শাহর আত্মহত্যা প্রসঙ্গে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সামিরা বলেন, ‘ও (ইমন) মেন্টালি সুইসাইডাল বাই নেচার। এর আগেও তিনবার সুইসাইডের চেষ্টা করেছে। মেট্রোপলিটন হাসপাতালের রেকর্ড চেক করলে সেটা জানা যাবে। সেখানে দুবারের রেকর্ড আছে। আরেক হাসপাতালে আছে তৃতীয় রেকর্ড। তিনটাই আমাদের বিয়ের আগের ঘটনা। তিনটা ঘটনাই আমি জানি। একবার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে করেছিল। আরেকবার আমাকে বিয়েতে রাজি করানোর জন্য করেছে। আরেকবার অন্য একটি ঘটনায় সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।’
সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী বরাবরই দাবি করে আসছেন, তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করেননি, বরং তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সাবেক প্রধান বনজ কুমার মজুমদার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছিলেন, ‘খুন নয়, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন।’ পিবিআই সেদিন সালমানের আত্মহত্যার পেছনে পাঁচটি কারণও দাঁড় করিয়েছিলেন।
চলচ্চিত্রে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র সালমান শাহর অকালমৃত্যুর রহস্য আজও অমীমাংসিত থেকে গেছে। কিন্তু সালমান শাহ আত্মহত্যাপ্রবণ ছিলেন—এই দাবি আবারও আলোচনায় ফিরিয়ে এনেছেন তাঁর সাবেক স্ত্রী সামিরা হক। এদিকে ২৯ বছর আগে সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় সপ্তাহখানেক হত্যা মামলা করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি তদন্তের জন্য রমনা থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।