গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ৩৭ মিনিটে শুরু হওয়া এ মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলিগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় আলেম মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ। তার দোয়া বাংলায় অনুবাদ করেন বাংলাদেশের মাওলানা মুনির বিন ইউসুফ। প্রায় ৩০ মিনিট উর্দুতে মোনাজাত পরিচালনার পর দুপুর ১টা ৭ মিনিটে শেষ হয় আখেরি মোনাজাত।
মোনাজাতে সবাই যেন কিছু সময়ের জন্য আল্লাহর প্রেমে দিওয়ানা হয়ে ভুলে গিয়েছিলেন হিংসা-বিদ্বেষ ও ভেদাভেদ। আমির-ফকির, ধনী-গরিব, নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশা ও গোষ্ঠীর মানুষ পরওয়ারদিগার আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বিশাল জনসমুদ্র থেকে মধ্যাহ্নের আকাশ কাঁপিয়ে ধ্বনি উঠে ‘ইয়া আল্লাহ, ইয়া আল্লাহ’।
আখেরি মোনাজাত মুঠোফোন, বেতার, ওয়ারলেস সেট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মানুষ এক সঙ্গে হাত তুলেছেন ক্ষমাশীল পরওয়ারদিগারের শাহী দরবারে।
ফজরের নামাজের পর হেদায়েতি বয়ান করেন ভারতের মাওলানা মোরসালিন, যার বাংলা তরজমা করেন মাওলানা ওসামা ইসলাম। আখেরি মোনাজাতের আগে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে হেদায়েতের কথা বলেন মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ, যার তরজমা করেন মাওলানা মুনির বিন ইউসুফ।
আখেরি মোনাজাত নির্বিঘ্ন করতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়। মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে রেলওয়ে বিভাগ আটটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। এবারের ইজতেমায় ৪৯টি দেশের প্রায় দেড় হাজার বিদেশি মুসল্লি অংশ নেন। আখেরি মোনাজাত শেষে তারা দাওয়াতি সফরে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়বেন।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে এখন পর্যন্ত তিনজন মুসল্লির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর আগে, প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় ধাপ ৩ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তাবলিগ জামাতের আলমি শুরার অনুসারীরা অংশ নেন।