২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩

ছবি : সংগৃহীত।

অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনি গ্রামগুলোর ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে। 

এ হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। 

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানায়, আল-শিফা হাসপাতালে ৩৫ জন অজ্ঞাতনামা ফিলিস্তিনির মরদেহ পাঠানো হয়েছে, যাদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৯ হাজার ১৮২ জন নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। 

গত ১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পরও ইসরায়েলি বাহিনী ২৪৫ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে গাজা প্রশাসন।

যেখানে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে পরিচালিত হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জন বন্দী হয়েছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েলের গণহত্যা শুরুর দুই বছর পরও গাজা জুড়ে হাজার হাজার নিখোঁজ মানুষের মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আযুম জানিয়েছেন, “গাজার পরিবারগুলোর জন্য প্রিয়জনদের সন্ধান এখনও এক দূরবর্তী স্বপ্ন। 

অনেকে হাসপাতাল, মর্গ ও শনাক্তকরণ কেন্দ্রে গিয়ে পোশাকের টুকরো, ক্ষত বা ব্যক্তিগত জিনিসপত্র দেখে দেহাবশেষ শনাক্তের চেষ্টা করছেন।”

তিনি আরও জানান, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা মৃতদেহের পচন এবং ডিএনএ পরীক্ষার সরঞ্জামের অভাবে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পরেছেন, যার ফলে বহু পরিবার গভীর অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের হিসাব অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েল কমপক্ষে ২৮২ বার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে—বিমান, কামান ও সরাসরি গুলি চালিয়ে।

এদিকে চুক্তি অনুযায়ী গাজায় পূর্ণ মানবিক সহায়তা পাঠানোর কথা থাকলেও জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজায় গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৬ লাখ সিরিঞ্জ ও ১০ লাখ শিশুখাদ্যের বোতল, যা যুদ্ধের কারণে নিয়মিত টিকা না পাওয়া ৪০ হাজার শিশুর জন্য জরুরি প্রয়োজন।

ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্দো পাইরেস বলেন, “সিরিঞ্জ ও রেফ্রিজারেটরকে ইসরায়েল ‘দ্বৈত ব্যবহারযোগ্য’ বলে মনে করে, তাই এগুলো ছাড়পত্র পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।”

জাতিসংঘের তথ্যমতে, ১০ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত গাজায় প্রবেশ করেছে মাত্র ৩,৪৫১টি ত্রাণবাহী ট্রাক, যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য।

এছাড়াও বিদ্যুৎবিহীন গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে অন্ধকারে কাটছে সাধারণ মানুষের রাত। গাজার বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ থাবেত বলেন, “বর্তমানে গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ শূন্য।”

পশ্চিম তীরে বসতিস্থাপনকারীদের হামলা

অন্যদিকে দখলকৃত পশ্চিম তীরে মঙ্গলবার ডজনখানেক মুখোশধারী ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারী বেইত লিদ ও দেইর শরাফ গ্রামে হামলা চালায়। তারা চারটি দুধবাহী ট্রাক, কৃষিজমি ও বেদুইনদের টিনের ঘরপোড়া টেন্টে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে চার ফিলিস্তিনি আহত হন।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা মুয়াইয়্যাদ শাবান অভিযোগ করেন, ইসরায়েল সরকার বসতিস্থাপনকারীদের এসব হামলার সুরক্ষা ও দায়মুক্তি দিচ্ছে।

ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে চারজন ইসরায়েলিকে আটক করা হয়েছে। ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ হামলাকে “অত্যন্ত নিন্দনীয় ও সীমালঙ্ঘনকারী” বলে উল্লেখ করেছেন।


  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাংবাদিককে তুলে নেওয়ার বিষয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গণভোট নিয়ে কোনো আইন নেই: সিইসি

দিল্লিতে খলিলুর রহমান-অজিত দোভাল বৈঠক

কটন বাড দিয়ে কান পরিষ্কার ক্ষতিকর!

শিশুশিল্পী থেকে রণবীরের নায়িকা, কে এই সারা অর্জুন!

এটা তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা টেস্ট ম্যাচগুলোর একটি হবে

লিবিয়ায় ৩ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার পর সাগরে নিক্ষেপ

ডেঙ্গুতে আরও ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৭৮৮

প্রচারণায় তারেক রহমানের ছবি ব্যবহারে এনসিপির আপত্তি

সঞ্জীব চৌধুরীর প্রয়াণ দিবস আজ

১০

পল্লবীতে যুবদল নেতা কিবরিয়া হত্যা: পাতা সোহেল ও সুজন গ্রেপ্তার

১১

শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন নিশ্চিতে সেনাবাহিনীর সহায়তা প্রয়োজন: প্রধান উপদেষ্টা

১২