পুলিশে চার স্তরে রদবদল, আসবে নতুন মুখ

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের মাঠ প্রশাসনে রদবদল শুরু হয়েছে। পুলিশের চারটি স্তরে আসবে নতুন মুখ। রেঞ্জ ডিআইজি, মহানগর কমিশনার, পুলিশ সুপার (এসপি), অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পরিবর্তন করা হবে। নির্বাচন সামনে রেখে এসপি পদায়নের জন্য এরই মধ্যে লটারি করা হয়েছে। 

সোমবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় লটারি করে নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালনের জন্য ৬৪ জেলার এসপি চূড়ান্ত করা হয়। দু-এক দিনের মধ্যে তার প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। এরপর তাদের পদায়ন করা হবে। লটারির মাধ্যমে এসপি হিসেবে যারা চূড়ান্ত তালিকায় রয়েছেন, তাদের এক-চতুর্থাংশ নতুন মুখ। বাকিরা বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে লটারির মাধ্যমে তাদের জেলা পরিবর্তন হয়েছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, সোমবার রাতে লটারির মাধ্যমে ৬৪ জেলার এসপি চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগির তাদের পদায়ন বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ বা আগামীকালের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। 

এদিকে পুলিশের একটি সূত্র বলছে, সারাদেশের ৬৬৬টি থানায় ওসির পদায়নও হবে লটারির মাধ্যমে। প্রথমে ‘যোগ্য’ কর্মকর্তা বাছাই করা হবে। এরপর জেলার এসপিরা লটারির মাধ্যমে ওসি চূড়ান্ত করবেন। আর মহানগর কমিশনার তাঁর এলাকার আওতাধীন ওসির পদায়নের জন্য লটারির আয়োজন করবেন। তবে ওসি চূড়ান্ত করার আগে রেঞ্জ ডিআইজি, কমিশনার এবং এসপি পদায়ন হবে।

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্র জানায়, যমুনায় লটারির সময় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ‘যোগ্য’ এসপি খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া আগে থেকে শুরু করে পুলিশ সদরদপ্তর। এ জন্য বর্তমানে ৬৪ জেলায় যারা পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের যোগ্যতার মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। রেঞ্জ ডিআইজিদের মাধ্যমে এ মূল্যায়ন করা হয়।

জেলার দায়িত্বে আছেন– এমন এসপি ছাড়া বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত একই পদমর্যাদার ‘যোগ্য’ কর্মকর্তার তালিকাও তৈরি করা হয়। তাদের সবাইকে নিয়ে পুল গঠন করা হয়। তিনটি পুল থেকে নির্বাচনকালে মাঠ প্রশাসনে পুলিশ সুপার লটারির মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয়।

লটারির মাধ্যমে এসপি বাছাই করা নিয়ে পুলিশের ভেতরে দুই ধরনের মত তৈরি হয়েছে। কেউ বলছেন, লটারির মাধ্যমে কম যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ জেলায় পদায়ন পেতে পারেন। তখন সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আবার অনেক দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তা কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন পেতে পারেন। এতে পুলিশের মাঠ প্রশাসনে এক ধরনের স্থবিরতা আসতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছেন, লটারির মাধ্যমে কর্মকর্তা চূড়ান্ত হওয়ার কারণে ‘মুখ দেখে’ বাছাই করার সুযোগ থাকবে না। 

পুলিশের আরেক কর্মকর্তা বলছেন, রদবদলের ভালো-খারাপ দুটি দিক আছে। বেশিদিন এক জায়গায় থাকলে অনেক কর্মকর্তার এক ধরনের বলয় তৈরি হয়। এতে কারও কারও ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি ঘটতে পারে। আবার অনেক কর্মকর্তা নতুন জায়গায় যাওয়ার পরপরই সবকিছু চিনে উঠতে সময় লাগে। 

পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে পুলিশ সুপার ও থানার ওসি হিসেবে পদায়নের জন্য বাছাই তালিকা প্রণয়ন করার কথা বলা হয়। সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, পদায়ন, বদলি, পদোন্নতির ক্ষেত্রে সততা ও নিষ্ঠাকে গুরুত্ব দিতে হবে। 


  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হংকংয়ে আবাসিক ভবনে ভয়াবহ আগুন, নিহত ৪

শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে বাংলাদেশের জয়

ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ

রাজনীতি করে নতুন বাড়ি করিনি, বিক্রি করেছি: ফখরুল

লটারিতে ৬৪ জেলার এসপি রদবদল

ওসিদেরও লটারির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে

প্রতিদিন সকালে ভেজানো খেজুর খেলে আপনার শরীরের কি ঘটে!

বাংলাদেশ মেডিক্যাল হাসপাতালে আগুন

কেউ নির্বাচন প্রতিহত করতে চাইলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : সিইসি

১০

অগ্রণী ব্যাংকে শেখ হাসিনার দুই লকার ভেঙে মিলল ৮৩২ ভরি স্বর্ণ

১১

কড়াইল বস্তির আগুনে পুড়েছে ১৫শ ঘর, নিস্ব বাসিন্দারা

১২