শীতে ঠান্ডা জনিত রোগে বেশী ভুগছে শিশু ও বয়স্করা

শীতে ঠান্ডা জনিত রোগে বেশী আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। ছবি: সংগৃহিত

কয়েক দিন ধরে ঢাকাসহ সারাদেশেই জেঁকে বসেছে শীত। পৌষের শুরু থেকেই সারাদেশে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। শীতে ঠান্ডাজনিত রোগে বেশী ভুগছে শিশু ও বয়স্করা। চিকিৎসকদের মতে, শীতে শিশুদের ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরনের রোগ দেখা দেয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল, আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, কলেরা হাসপাতালসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডায়রিয়া, সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে আসা সর্দি-জ্বরে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু। এ ছাড়াও সেখানে বহির্বিভাগে প্রতিদিন সেবা নিতে আসা জ্বর, ঠান্ডা ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।

ঢাকা ছাড়াও সারাদেশেই শীতের কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্তের পরিমাণ। প্রতিদিনই জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন রোগীরা। 

চিকিৎসকরা বলছেন, চলতি বছরে হঠাৎ করে শীত বেড়ে যাওয়ার কারণে দুই থেকে তিন গুণ বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা বেশির ভাগই শিশু। বাচ্চারা শ্বাসতন্ত্রের নানা ধরনের সংক্রমণ ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বাচ্চাদের অ্যাজমাও বেড়ে গেছে। আক্রান্ত অনেক শিশুকে দেরিতে তাদের কাছে আনা হচ্ছে। আগেই অভিভাবকরা স্থানীয় ফার্মেসির ওষুধ খাওয়াচ্ছেন। এতে শারীরিক জটিলতা বাড়ছে।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের (ঢাকা শিশু হাসপাতাল) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলম বলেন, শুধু শীতে নয়, এখন বায়ুদূষণেও আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। জ্বর-সর্দি-কাশি গলায় ইরিটেশন হচ্ছে। দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের ব্রংকিউলাইটিস এবং দুই বছরের বেশি বয়সি শিশুদের নিউমোনিয়া দেখা দিচ্ছে। যাদের অ্যাজমা আছে, শীতে তা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। শীতে শিশুদের ডায়রিয়ার ঝুঁকিও থাকে।

গরমের তুলনায় শীতকালে শিশুদের তুলনামূলক পানি কম খাওয়ানো হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। যাতে শিশুরা শীতে পর্যাপ্ত পানি পান করে। বাসায় বড়দের যদি জ্বর-সর্দি-কাশি হয়, তাহলে তারা যেন বাসায় মাস্ক ব্যবহার করেন। কারণ তারা যখন হাঁচি, কাশি দেবেন তা দ্বারা শিশুরা যেন সংক্রমিত না হয়। শিশুদের বিষয়ে বিশেষ যত্ন নিতে হবে।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু রেসপিরেটরি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নাবিলা আকন্দ বলেন, নিউমোনিয়ার লক্ষণ হচ্ছে- কাশি, তার সঙ্গে জ্বর, শ্বাসতন্ত্রের জটিলতার জন্য শ্বাসকষ্ট হতে পারে। খেতে না পারা, বমি করে দেওয়া। নবজাতকের শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি যদি মিনিটে ৬০ বার থাকে, নবজাতক পরবর্তী এক বছর বয়সি শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি যদি ৫০ বার বা তার অধিক হয় এবং এক বছর থেকে ৫ বছর বয়সি শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি মিনিটে যদি ৪০ বার বা তার বেশি হয় তাহলে ধরে নিতে হবে অবশ্যই ঝুঁকি আছে। তখন বাসায় বসে না থেকে অবশ্যই শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের জন্য বুকের দুধ খাওয়ানো খুবই জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু বুকের দুধপানে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। সময়মতো টিকাগুলো দিতে হবে। যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম, দুর্বল প্রকৃতির শিশু, যাদের নিউমোনিয়া বারবার হয় বা হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাদের জন্য সরকারি টিকার পাশাপাশি প্রতিবছর ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নিতে পারলে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি কমে আসবে বলে জানান তিনি।

 


  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

'বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়াই বিএনপির লক্ষ্য'

'লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল প্রমাণ করে যে বিএনপি এশিয়া মহাদেশের সর্ব বৃহৎ সংগঠন'

‘প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই সচিবালয়ে সংকট নিরসনে সিদ্ধান্ত’

নয়াপল্টনে তারুণ্যের সমাবেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল

চারদিনের সফরে জাপান পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

কারামুক্ত হলেন এটিএম আজহার

কুরবানি ঘিরে চুয়াডাঙ্গায় ১ হাজার কোটি টাকার পশু বিক্রির সম্ভাবনা

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী গ্রেপ্তার

মিরপুরে দিনে-দুপুরে গুলি করে ২২ লাখ টাকা ছিনতাই

এটিএম আজহারের রায় নিয়ে যা বললেন আসিফ নজরুল

১০

খালাস পেলেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহার

১১

জামায়াত নেতা আজহারের আপিলের রায় আজ

১২