ইরানের হামলায় ইসরাইলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রকাশ

ইরান সম্প্রতি ইসরাইলের সামরিক এবং গোয়েন্দা ঘাঁটিগুলোতে বড় ধরনের মিসাইল হামলা চালায়। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-২’ এর অধীনে পরিচালিত এ আক্রমণের ফলে ইসরাইলি অধিকৃত অঞ্চলে ব্যাপক সাইরেনের শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। ইরানের এ পাল্টা আঘাত ইসরাইলের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যেখানে ইসরাইলের হামলাইয় হামাসের সাবেক প্রধান ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহর নেতা সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ এবং ইরানের আইআরজিসি কমান্ডার আব্বাস নিলফোরোশান নিহত হন। টার্গেট সাইটগুলোর বিস্তারিত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) মেহের নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে ইরানের মিসাইল হামলার পাঁচটি লক্ষ্যবস্তু সাইটের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। যেগুলোকে মূলত ইসরাইলের সামরিক ও গোয়েন্দা কাঠামোর মূল অংশ বলে মনে করা হয়। সাইটগুলি হলো: নেভাতিম বিমানঘাঁটি ইসরাইলের দক্ষিণে অবস্থিত নেভাতিম বিমানঘাঁটিতে দেশটির অত্যাধুনিক স্টেলথ ফাইটার জেট, ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফ্ট এবং ইলেকট্রনিক নজরদারি বিমান রয়েছে। এখানে তিনটি প্রধান রানওয়ে রয়েছে এবং এটি ইসরাইলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিমান ঘাঁটি। ২০২৪ সালের এপ্রিলে ইরানের চালানো প্রথম হামলায় এ ঘাঁটিতে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক হামলার পর স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, এই ঘাঁটিতে আরও বড় ক্ষতি হয়েছে। একটি বিশাল ভবনের ছাদে বড় ধরনের গর্ত দেখা যায়, যা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণেই হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। হাতজেরিম বিমানঘাঁটি নেভাতিমের পাশাপাশি হাতজেরিমও ইসরাইলের অন্যতম প্রধান বিমান ঘাঁটি। এখানে ইসরাইলি বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমি অবস্থিত। যেখানে প্রশিক্ষণ বিমান, যুদ্ধ বিমান এবং অ্যারোবেটিক টিমের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এ ঘাঁটিতে এফ-১৫ এবং এফ-১৬ যুদ্ধবিমান রয়েছে, যেগুলো পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম বলে ধারণা করা হয়। গিলিলোট গোয়েন্দা ঘাঁটি রাজধানী তেলআবিবের উত্তরে অবস্থিত গিলিলোট ঘাঁটিতে ইসরাইলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা ইউনিট ৮২০০-এর প্রধান কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই ইউনিট সিগনাল ইন্টেলিজেন্স (SIGINT) এবং ইলেকট্রনিক নজরদারির জন্য বিখ্যাত। তেলনফ বিমানঘাঁটি ইসরাইলের অন্যতম পুরাতন এবং প্রধান বিমানঘাঁটি হলো এই তেলনফ। যা সামরিক বিমান এবং পরমাণু অস্ত্র সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয় বলে ধারণা করা হয়। ইসরাইল এখানে এফ-১৫ যুদ্ধবিমান ও বিশেষ বাহিনীর ইউনিট ৬৬৯-এর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। ইউনিট ৫৫৫ ইউনিট ৫৫৫ মূলত স্কাই ক্রোস নামে পরিচিত। ইসরাইলের আকাশযুদ্ধ পরিচালনার একটি অত্যন্ত গোপনীয় ইউনিট। এটি মূলত ইলেকট্রনিক যুদ্ধ পরিচালনা করে এবং শত্রুর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে কাজ করে। হামলার প্রভাব মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে ইরানের মিসাইল হামলার কারণে ইসরাইলের বিভিন্ন অঞ্চলে সাইরেন বেজে ওঠে এবং এসব সামরিক ঘাঁটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। স্যাটেলাইট চিত্র এবং ভিডিও বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, ইরানের মিসাইলগুলো ইসরাইলের এসব ঘাঁটিকে সঠিকভাবে লক্ষ্যবস্তু করেছে এবং নেভাতিমসহ বিভিন্ন স্থানে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া ইসরাইল সরকার ইরানের এই হামলার বিষয়ে এখনও পুরোপুরি বিস্তারিত প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ইসরাইলের সামরিক শক্তির ওপর বড় ধরনের আঘাত হেনেছে। ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ইরানের এই হামলার ফলে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে সাম্প্রতিক এই মিসাইল হামলা ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার সামরিক প্রতিযোগিতায় নিঃসন্দেহে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।


  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের টিকিটের মূল্য প্রকাশ, যেভাবে কিনবেন

হত্যাচেষ্টার মামলায় অপু বিশ্বাসের জামিন

গত অর্থবছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ

সেনা কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন

নীরব ঘাতক ফুসফুুুুসের ক্যানসার, যেসব লক্ষণ বিপদের সংকেত দিচ্ছে

মিটফোর্ডে শিক্ষার্থীদের ‘শাটডাউন’ ঘোষণা

দুই মাসে ৬ হাজারের বেশি প্রবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে কুয়েত

সিইসির সঙ্গে বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধি দল

গাজায় ইসরাইলি হামলায় আরও ১১০ ফিলিস্তিনি নিহত

দুপুরের মধ্যে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে যেসব অঞ্চলে

১০

আবু সাঈদ হত্যা ও ৬ লাশ পোড়ানোর মামলা: আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির

১১

‘অন্যায়কারী যেই হোক, আমরা প্রশ্রয় দেব না’

১২