নতুন বাসায় ওঠার পর বা নতুন ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার সময় আমরা সাধারণত রাউটারটিকে টেকনিশিয়ানের রেখে দেওয়া জায়গাতেই রেখে দিই। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই টেকনিশিয়ানরা রাউটার ঠিক জায়গায় বসান না। রাউটার ভুল জায়গায় থাকলে ওয়াই-ফাইয়ের গতি কমে যায়, ভিডিও কলে ল্যাগ হয় এবং ঘরের বিভিন্ন অংশে সিগন্যাল পৌঁছায় না। এমনকি ভালো মানের রাউটার থাকলেও সঠিক অবস্থানে না থাকলে তার পারফরম্যান্স উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাউটার কোথায় রাখা হচ্ছে—এটাই দ্রুত ওয়াই-ফাইয়ের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ঘরের কোন স্থানে রাউটার রাখলে ভালো নেট পাওয়া যাবে, তা নির্ভর করে কয়েকটি মূল বিষয়ের উপর:
১. রাউটার বসান ঘরের কেন্দ্রভাগে
রাউটার সবদিকে সমানভাবে সিগনাল ছড়ায়। তাই কোনো কোণায় রাখলে সিগনালের বড় অংশ দেয়াল বা বাইরের দিকে নষ্ট হয়। ঘরের মাঝামাঝি স্থানে রাখলে সিগনাল চারদিকে সমানভাবে ছড়ায় এবং কাভারেজ অনেক বেশি বাড়ে। প্রয়োজন হলে লম্বা ইথারনেট কেবল ব্যবহার করে রাউটারকে কেন্দ্রস্থলে স্থাপন করা ভালো।
২. যত উঁচুতে রাখবেন, তত ভালো সিগনাল পাবেন
রাউটার নিচের দিকে অপেক্ষাকৃত শক্ত সিগনাল পাঠায়। তাই জমিনে বা টেবিলের নিচে রাখলে সিগনাল বাধাপ্রাপ্ত হয়। বুকশেলফ, আলমারি বা দেয়ালে মাউন্ট করে একটু উঁচুতে রাখলে সিগনাল অনেক মসৃণভাবে ছড়ায়।
৩. ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে রাখুন
কিছু জিনিস রাউটারের সিগনালকে দুর্বল করে বা ব্যাঘাত ঘটায়, যেমন- মাইক্রোওয়েভ: ২.৪ GHz ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে, যা রাউটারের সাথে সংঘর্ষ সৃষ্টি করে।
টিভি: বড় স্ক্রিন সিগনাল আটকে দেয় এবং ইন্টারফিয়ারেন্স বাড়ায়।
ধাতব বস্তু: সিগনাল প্রতিফলিত বা শোষণ করে।
অ্যাকুয়ারিয়াম: পানির কারণে ওয়াই-ফাই সিগনাল সহজে পাস করতে পারে না।
রাউটার ও ডিভাইসের মাঝখানে এসব জিনিস থাকলে নেটের গতি কমে যেতে বাধ্য।
সঠিক স্থানে রাউটার রাখলেই ওয়াই-ফাই স্পিড অনেক বেড়ে যায়। আমরা অনেক সময় অজান্তেই রাউটারকে মেঝে, কোণা বা ইলেকট্রনিকসের পাশে রেখে ইন্টারনেট ধীর হওয়ার কারণ তৈরি করি। রাউটার যত উন্নত প্রযুক্তিরই হোক, ভুল জায়গায় থাকলে তার ক্ষমতার অর্ধেকই নষ্ট হয়ে যায়। তাই নতুন ইন্টারনেট নেওয়ার পর রাউটার রাখার জন্য ঘরের সবচেয়ে উপযোগী জায়গাটি বেছে নিন।
সূত্র: সিনেট