ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় এবার সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও তার দুই ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এবং রাসেল আহাম্মদ তুহিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে কিশোরগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন তহমুল ইসলাম মাজহারুল নামে এক বিএনপি কর্মী। দেশে এই প্রথম কোনো মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আসামি করা হলো।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলাটি তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ ১২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদি তহমুল ইসলাম মাজহারুল জানান, তিনি জুলাই আন্দোলনের সময় আহত হন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর এখন কিছুটা সুস্থ হয়ে মামলাটি করলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ সদর থানায় ১১টি মামলাসহ জেলায় প্রায় অর্ধশত মামলা হয়েছে। এসব মামলায় চার হাজার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে। তবে দেশে এই প্রথম কোনো মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আসামি করা হলো।
মামলায় সাবেক এই রাষ্ট্রপতিকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আর ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ও ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানাকে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে দেশবিদেশে অবস্থান করা ১ নম্বর থেকে ২০ নম্বর আসামিরা সারা দেশে গণহত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই মোতাবেক তারা কিশোরগঞ্জে যাতে কোনো আন্দোলন হতে না পারে, সে জন্য ২১-৪০ নম্বর আসামিদের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য ৪১-১২৪ নম্বর আসামিরা শটগান, বন্দুক, পিস্তল, ককটেল, বোমা ও দেশীয় অস্ত্র এবং অর্থ সরবরাহ করে আন্দোলন দমাতে গণহত্যার নির্দেশ দেন।
গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে জেলা শহরের স্টেশন রোড এলাকায় ছাত্র–জনতার মিছিলে হামলা চালান আসামিরা। তারা গুলি চালিয়ে মামলার বাদীসহ সাক্ষীদের আহত করেন। এছাড়া গ্রেনেড, ককটেল ও বোমা নিক্ষেপ করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন তারা।
(বিনিউজ/১৫জানুয়ারি/এমআই)