আণবিক বিজ্ঞানী রেজাউর রহমান আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রেজাউর রহমান।
স্বজনেরা জানান, ১৩ অক্টোবর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন রেজাউর রহমান। সেদিন তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৫ অক্টোবর তাঁর অস্ত্রোপচার (ওপেন হার্ট সার্জারি) হয়। গতকাল শনিবার তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকাল ১০টায় তিনি মারা যান।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, রেজাউর রহমানের মরদেহ ল্যাবএইড হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। ছোট মেয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পর তাঁর দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
রেজাউর রহমানের স্ত্রী হালিমা রহমান, দুই মেয়ে নীলাঞ্জনা রহমান, মঞ্জুলিকা রহমানসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
রেজাউর রহমানের জন্ম ১৯৪৪ সালে। বাবা ফজলুর রহমান, মা লুৎফুনন্নেসা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগ থেকে এমএসসি করেন ১৯৬৫ সালে। ১৯৭৫ সালে তিনি পড়াশোনা করতে যান চেক একাডেমি অব সায়েন্সেসে। সেখানে তিনি রেডিয়েশন বায়োলজি বিভাগে যোগ দেন। গবেষণা করেন ‘রেডিয়েশন এফেক্টস অন ইনসেক্টস’ নিয়ে। ১৯৭৯ সালে কীটতত্ত্বে পিএইচডি সম্পন্ন করে দেশে ফিরে আসেন। ফলের মাছি পারসুয়েশন অব ফ্রুট ফ্লাই (বৈজ্ঞানিক নাম Ceratitis capitata) নিয়ে মৌলিক গবেষণা শুরু করেন। সেখান থেকে গবেষণার কাজে ভিয়েনা, যুক্তরাষ্ট্র ঘুরে আবার দেশে ফিরে আসেন। ফ্রুট ফ্লাইয়ের ওপর শিক্ষার্থীদের পিএইচডি করান। তারপর থেকে টানা ৩৫ বছর গবেষণা করেছেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে। একসময় খণ্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে পড়িয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক হিসেবে রেজাউর রহমান জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি বিজ্ঞানবিষয়ক পাঠ্যবইসহ বেশ কিছু জনপ্রিয় ধারার বিজ্ঞান গ্রন্থ লিখেছেন। লিখেছেন বিজ্ঞানবিষয়ক অনেক প্রবন্ধ। এ ছাড়া তিনি বেশ কিছু উপন্যাস ও গল্প লিখেছেন। বিজ্ঞান বিষয়ে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ পান রেজাউর রহমান।