সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিদিন প্রকাশিত হয় অসংখ্য ছবি, ভিডিও ও অডিও। এর অনেক কনটেন্ট এতটাই বাস্তবসম্মত যে সাধারণ ব্যবহারকারীরা সহজেই বিভ্রান্ত হন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সহজলভ্যতা ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট তৈরিকে আরও সহজ করেছে। ফলে ডিজিটাল পরিবেশে বিভ্রান্তি এড়াতে আসল ও নকল কনটেন্ট শনাক্ত করার দক্ষতা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
খুঁটিনাটির দিকে খেয়াল রাখুন
এআই–তৈরি ছবি বা ভিডিও দেখে প্রথমে সত্যি মনে হতে পারে, কিন্তু মনোযোগ দিলে ভুলগুলো বোঝা যায়—আঙুলের অস্বাভাবিক গঠন, মুখের পাশে অদ্ভুত ঝাপসা ভাব, চোখের অদ্ভুত দৃষ্টি, দাঁতের অমিল ইত্যাদি। ভিডিওতে ঠোঁটের নড়াচড়া ও শব্দের তাল না মেলা ডিপফেকের বড় লক্ষণ।
ব্যাকগ্রাউন্ডেও লুকিয়ে থাকে সূত্র
অনেক সময় মূল ছবিটি ঠিকঠাক হলেও পেছনের দৃশ্যে ভুল থাকে—ছায়া ভুল দিকে পড়া, আলো অস্বাভাবিক হওয়া, কোনো বস্তুর আকৃতি বেঁকে যাওয়া, একই জিনিস দুইবার দেখা যাওয়া বা অতিরিক্ত নিখুঁত ব্যাকগ্রাউন্ড—এসবই এআইয়ের পরিচিত চিহ্ন।
উৎস যাচাই করুন
একটি ছবি বা ভিডিও নিয়ে সন্দেহ হলে ব্যাকরণ না দেখে আগে তার উৎস খুঁজুন। গুগল লেন্সের মতো রিভার্স–সার্চ টুল ব্যবহার করে দেখতে পারেন এটি প্রথম কোথায় পাওয়া গেছে। যদি দেখা যায় ছবিটি আগে অন্য প্রসঙ্গে ব্যবহার হয়েছে অথবা কৃত্রিম ছবির সাইটে পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত।
শব্দ, বাক্য ও বক্তব্যে নজর দিন
এখন শুধু ছবি নয়, কণ্ঠস্বরও নকল করা যায়। ফলে অনেক পরিচিত ব্যক্তির নামে ভুয়া বক্তব্য ছড়ানো হয়। এসব ভিডিওতে সাধারণত আওয়াজের উচ্চারণ, কথার গতি বা ঠোঁটের নড়াচড়ায় সামান্য অসামঞ্জস্য থাকে। আর এআই–তৈরি লেখা বা ক্যাপশনে দেখা যায় অস্বাভাবিক বাক্যগঠন, অপ্রাসঙ্গিক তথ্য বা একই শব্দ বারবার ব্যবহার।
বিশ্বস্ত সূত্রকে অগ্রাধিকার দিন
ভাইরাল কিছু দেখলেই শেয়ার করা উচিত নয়। অপরিচিত পেজ, সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট বা অযাচাইকৃত ওয়েবসাইটের তথ্য বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। বরং নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম বা সরকারি সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া ভালো।
ভুয়া কনটেন্ট ঠেকানোর প্রথম শর্ত হলো ব্যক্তিগত সতর্কতা। কোনো ছবি বা ভিডিও দেখলেই নিজেকে প্রশ্ন করুন—এটি সত্যি তো? যাচাই না করে কখনো শেয়ার করবেন না। তথ্যের যুগে সচেতনতাই সবচেয়ে বড় শক্তি।