ফেনীর ট্রাংক রোডের মুক্তবাজার এলাকায় অবস্থিত জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। রবিবার (১৬ নভেম্বর) ভোরে স্থানীয়রা স্মৃতিস্তম্ভের একটি অংশ পোড়া অবস্থায় দেখতে পান। তবে বড় কোনও ক্ষতি না হলেও এটি পরিকল্পিত নাশকতা নাকি ভীতি তৈরির চেষ্টা– এ নিয়ে জনমনে নানা কথা ঘুরপাক খাচ্ছে।
স্মৃতিস্তম্ভের ভাঙা অক্ষর, পোড়া ফ্লোর ও দেয়ালের কিছু অংশ দেখে স্থানীয়দের ধারণা– রাতে আগুন ধরিয়ে দ্রুত পালিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
স্মৃতিস্তম্ভটির অবস্থান ফেনী মডেল থানা থেকে মাত্র দেড় শ গজ দূরে। শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে আগুন দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মুখে মাস্ক পরা এক যুবক কেরোসিন ঢেলে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে আগুন দেন। তাঁর পাশেই মাস্ক পরা আরও কয়েকজন যুবক দাঁড়িয়ে ছিলেন। এর মধ্যে একজন আগুন দেওয়ার ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করেন। আগুন লাগার পরপরই তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, স্তম্ভটি লোহার তৈরি হওয়ায় আগুনে এর নিচের কিছু অংশ পুড়ে কালো রং ধারণ করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে এ ঘটনায় জড়িতদের বেলা দেড়টা পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ফেনী জেলা সংগঠক ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মুহায়মিন তাজিম বলেন, ‘আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের কিছু লোকজন জনমনে ভীতি সৃষ্টির জন্য এ ধরনের হামলা চালাচ্ছে। প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে হবে।’
তাজিম আরও বলেন, ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ প্রতিরোধ-সংগ্রামের প্রতীক। স্মৃতিস্তম্ভে হামলা মানে জনগণের ঐতিহাসিক স্মৃতিতে আঘাত।’
ফেনী মডেল থানার ওসি বলেন, ‘ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এটি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, প্রাথমিকভাবে ক্রিমিনাল অ্যাক্ট হিসেবেই দেখছি।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত কিনা, বা কারা জড়িত— তা তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।’
ওই এলাকার বাসিন্দা সালমা আক্তার বলেন, ‘রাতে কে বা কারা এসে আগুন দিলো, কেউ জানে না। কিন্তু এটা পরিকল্পিত হামলা।’