জুলাই বিপ্লবের কৃতিত্বের দাবি নিয়ে লড়াই চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুরুল হক মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি প্রয়াত হান্নান আহমেদ খান বাবলু’র স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ মন্তব্য করেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, দীর্ঘ দেড় দশক আগে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছিলাম তা একদফায় রূপান্তরিত হয়েছিলো। যে কারণে একদফায় পরিনত হয়েছিলো সেই একই কারণে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছিলো, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিলো। একই কারণে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানও হয়েছিলো। দুঃখের বিষয় কোনো না কোনোভাবে এ বিজয় ছিনতাই হয়ে যায়।
তিনি বলেন, এখন জুলাই বিপ্লবের পাঁচ মাস পার না হতেই এ বিজয়ের কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য লড়াই শুরু হয়েছে। জুলাই বিপ্লব কারও একক কৃতিত্বে সফলতা আসেনি। গত ১৫ বছরে যারা খুন হয়েছেন, গুম হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাদেরসহ এ আন্দোলনে ছাত্র-শিশু, শ্রমজীবী সবারই অবদান রয়েছে। এটিতো সবাই ভাগ করতে পারে। একা নিলে কাধ ভারি হয়ে যাবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এখন অনেকে দাবি করছেন তারাই জানে কিসে জনগণের কল্যাণ। একই ট্যাবলেট খাওয়ানোর চেষ্টা হয়েছিলো স্বাধীনতার পরও। যারা মুক্তিযুদ্ধে যায়নি তারাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা শুনিয়েছে। এখন এমন একটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যেখানে জনগণ তাদের মত প্রকাশ করতে পারে, ভোটাধিকার প্রয়োগ করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এটিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার বিদায় নিয়েছে সত্য, কিন্তু নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। হাসিনা সরকারের প্রেতাত্মারা এখনো সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিরাজ করছে এবং নানামুখী সমস্যার সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, কতগুলো নন ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে রাজনীতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেখানে জাতীয় নির্বাচনের বিষয় সামনে আসার কথা, তা না এনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা কেন সামনে আনা হচ্ছে। কার স্বার্থে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয় সামনে আসছে। জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হলে নতুন করে ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের ডালপালা গজাবে। পতীত স্বৈরাচার আবারও পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে। শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদবিরোধী যে লড়াই আমরা শুরু করেছি সেটা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। এদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। এ ব্যাপারে আমাদের সকল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীমের পরিচালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাস খান, প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ্ব সেলিম মাস্টার, জোবায়ের হায়দার অয়ন, যুগ্ম মহাসচিব কাজী মো. নজরুল, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন সরকার, ছাত্র সমাজের সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান অভি প্রমুখ।