ইসলামে জুমার দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে মুসলমানদের এই দিনে দ্রুত মসজিদে গমন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাদিসেও জুমার দিনে বিশেষ আমল ও সওয়াবের কথা উল্লেখ আছে।
১. জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদা
আবু লুবাবা বিন আবদুল মুনজির (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার দিনে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছেন—
১. আল্লাহ তাআলা এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন।
২. আদম (আ.)-কে জমিনে অবতরণ করিয়েছেন।
৩. এই দিনে আদম (আ.)-কে মৃত্যু দিয়েছেন।
৪. একটি বিশেষ সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলে তা কবুল হয় (হারাম ছাড়া)।
৫. কিয়ামত সংঘটিত হবে এই দিনে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৮৯৫)
২. জুমার নামাজ আদায়
রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করবে, সুগন্ধ ব্যবহার করবে, মসজিদে যাবে এবং নির্দিষ্টভাবে নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তার দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহ মাফ করবেন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৮৩)
৩. গোসল ও আগে মসজিদে যাওয়া
জুমার দিন গোসল করা ও মসজিদে আগে যাওয়া অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। প্রাথমিকভাবে মসজিদে আগমনের প্রতিটি ধাপের জন্য আলাদা সওয়াব রয়েছে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৫)
৪. মসজিদে প্রথমে প্রবেশ করা
যত দ্রুত মসজিদে প্রবেশ করা হবে, তত বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। প্রথমে যাওয়া যেমন একটি উট কোরবানি সমান, তার পরে যাওয়া যেমন গরু, ছাগল, মুরগি বা ডিম সদকা। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৪১)
৫. দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত
জুমার দিন এমন একটি সময় আছে, যখন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলে তা কবুল হয়। বিশেষ করে আছরের সময়ের শেষ দিকে এই মুহূর্ত অনুসন্ধান করা উত্তম। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)
৬. সুরা কাহাফ পাঠ
জুমার দিনে সুরা কাহাফ পাঠ করলে দুই জুমার মধ্যবর্তী সময় আলোকিত থাকে। শেষ ১০ আয়াত পাঠ করলে দাজ্জালও ক্ষতি করতে পারবে না। (সহিহ তারগিব, হাদিস : ১৪৭৩)
৭. দরুদ পাঠ
রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার দিনে নবীজির ওপর বেশি দরুদ পাঠ করা উচিত। এই দিনে পাঠ করা দরুদ আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)
৮. সারা বছর গুনাহ মোচন
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমা থেকে পরবর্তী জুমা, এক রমজান থেকে পরবর্তী রমজান পর্যন্ত পাপ মাফ হয় যদি ব্যক্তি কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে। (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)
এই সব আমল অনুসরণ করে জুমার দিনে মুসলমানরা গুনাহ মাফ ও বরকতের দারজা বৃদ্ধি করতে পারেন।