১০০ আসনের উচ্চকক্ষ, পিআর পদ্ধতিতে মনোনীত হবেন সদস্যরা

ছবি সংগৃহীত ।

জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসন বিশিষ্ট। এই সদস্যরা মনোনীত হবেন সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর), অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর যে ভোট পাবে, সেই হারে দলগুলোর মধ্যে এসব আসন বণ্টন করা হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর কমিশন এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। তবে এতে আপত্তি আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি এবং তাদের সমমনা দল ও জোটগুলো। তারা বলেছে, দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে নয়, প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষে সদস্য মনোনীত হতে হবে।

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব দ্রুত চূড়ান্ত সনদ প্রস্তুত করে আপনাদের হাতে তুলে দিতে। এর ভিত্তিতে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাও করা হবে।'’

তিনি আশা প্রকাশ করেন যে আজকের মধ্যেই আলোচনা পর্বের সমাপ্তি টানা সম্ভব হবে। আলোচনা শেষে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে এবং যেসব বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা দ্রুত দলগুলোর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

আজকের বৈঠকে সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্য কীভাবে মনোনীত হবেন, তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব করে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলো এ প্রস্তাব সমর্থন করে। অপর দিকে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো বিরোধিতা করে। সে সময়ও তারা সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষে আসন বরাদ্দের দাবি জানায়।

আলোচনায় দলগুলোর ভিন্নমত থাকায় একপর্যায়ে বিষয়টি কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়। এরপর ঐকমত্য কমিশন ভোটের সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের সদস্য মনোনীত করার সিদ্ধান্ত জানায়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, উচ্চকক্ষের নিজস্ব কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকবে না। তবে, অর্থবিল ব্যতীত অন্য সব বিল নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ উভয় কক্ষে উপস্থাপন করতে হবে। উচ্চকক্ষ কোনো বিল স্থায়ীভাবে আটকে রাখতে পারবে না। এক মাসের বেশি বিল আটকে রাখলে সেটিকে উচ্চকক্ষের অনুমোদিত বলে গণ্য করা হবে।

নিম্নকক্ষের প্রস্তাবিত বিলগুলো পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করবে উচ্চকক্ষ এবং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তা অনুমোদন অথবা প্রত্যাখ্যান করতে হবে। যদি উচ্চকক্ষ কোনো বিল অনুমোদন করে, তবে উভয় কক্ষে পাস হওয়া বিল রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হবে। আর যদি উচ্চকক্ষ কোনো বিল প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে তা সংশোধনের সুপারিশসহ নিম্নকক্ষে পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠানো হবে। নিম্নকক্ষ সেই সব সংশোধন আংশিক বা পূর্ণভাবে গ্রহণ কিংবা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে।

কমিশনের এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি এবং তাদের মিত্র জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, এনডিএম ও এলডিপি। তারা সংসদের নিম্নকক্ষে প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষে আসন বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানায়।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিরোধিতা করেছে। তারা বলছে, দেশের বর্তমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতায় উচ্চকক্ষের কোনো প্রয়োজন নেই।

বৈঠকে ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, আইয়ুব মিয়া প্রমুখ উপস্থিত আছেন।


  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সেই সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত গঠন, মিলেছে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি কূটনৈতিক বিজয়: প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ

১০০ আসনের উচ্চকক্ষ, পিআর পদ্ধতিতে মনোনীত হবেন সদস্যরা

চুয়াডাঙ্গা দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ১৫ বাংলাদেশীকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ

'৪ জনের মধ্যে ৩ জনকে মেরে ফেলছে শুধু আমি বেঁচে আছি

আমাদের রক্তের উপর আপনারা দাড়িয়ে আছে, আমাদের লাঞ্চিত করবেন না'

নিশ্চিত থাকেন নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন, একদিনও দেরি হবে না : প্রেস সচিব

ওমানের অবৈধ প্রবাসীদের জন্য সুখবর

জুলাই সনদের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ

১০

রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব দেওয়ার শেষ সময় আজ

১১

আরও ১০৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা ইসরায়েলের

১২