দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হলো সকালের নাশতা। কিন্তু অনেক সময় ভুল অভ্যাসের কারণে এই নাশতাই শরীরের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালের খাবার খাওয়ার ধরন ও সময় হজম, বিপাকক্রিয়া এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, সকালের খাবার বাদ দেওয়া, অতিরিক্ত পরিশোধিত শর্করা খাওয়া এবং ফাইবার ও পানি উপেক্ষা করা—এই তিনটি সাধারণ ভুল সারা দিন অলসতা, ফোলা ভাব এবং পেট ভারী হওয়ার মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
নাশতা এড়ানো বা দেরিতে খাওয়া
পুষ্টিবিদ ও সার্টিফাইড ডায়াবেটিস এডুকেটর ড. আর্চনা বাত্রার মতে, সকালের খাবার বাদ দেওয়া হজমের জন্য সবচেয়ে সাধারণ ও ক্ষতিকারক ভুল। খালি পেটে দিন শুরু করলে, খাবার হজম করার মতো কিছু না থাকায় পাকস্থলির এসিড জমতে থাকে, যা এসিডিটি ও অস্বস্তি তৈরি করতে পারে।
দেরিতে সকালের খাবার খাওয়াও হজমের এনজাইমকে ধীর করে দেয়। যখন খাচ্ছেন, তখন এনজাইমগুলো অলস হয়ে যায়, ফলে ফোলা ভাব ও ধীরগতির বিপাক তৈরি হয়। ঘুম থেকে ওঠার এক ঘণ্টার মধ্যে খেলে অন্ত্রের কার্যকারিতা সক্রিয় থাকে।
পরিশোধিত শর্করা বা চিনি দিয়ে দিন শুরু করা
সাদা রুটি, বিস্কুট, প্যাকেটজাত সিরিয়াল বা মিষ্টি জাতীয় খাবারে থাকা পরিশোধিত শর্করা রক্তে শর্করার মাত্রায় হঠাৎ ওঠানামা ঘটায়। এতে ক্ষুধা বেড়ে যায় এবং শক্তি দ্রুত কমে যায়। পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন, সকালের খাবারে গোটা শস্য, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি রাখতে—যেমন বাদামসহ ওটস, ডিমের সঙ্গে মাল্টিগ্রেন টোস্ট বা সবজি পোহা।
ফাইবার ও হাইড্রেশন ভুলে যাওয়া
সময়মতো যদি সকালের খাবার খেয়েও থাকেন, ফাইবার এবং পানি বাদ দেওয়া হজমকে ধীর করতে পারে। পুষ্টিবিদ বিদি চাওলা, ফিসিকো ডায়েট অ্যান্ড এস্থেটিক ক্লিনিক-এর প্রতিষ্ঠাতা, বলেন, ফাইবার অন্ত্রের জন্য ঝাড়ুর মতো কাজ করে। এটি খাবারকে চলমান রাখে এবং অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি দেয়। কিন্তু অনেক সাধারণ নাশতায় এটি পুরোপুরি অনুপস্থিত থাকে।
সকালের খাবার কেবল ক্যালরি গ্রহণের মাধ্যম নয়, এটি আপনার হজম, বিপাক এবং সারা দিনের শক্তির মূল চাবিকাঠি। তাই সময়মতো, সুষম ও ফাইবার সমৃদ্ধ সকালের খাবার খাওয়াই স্বাস্থ্যকর জীবনের প্রথম ধাপ।