দীর্ঘ একযুগ পর সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জেলাজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। জেলার ব্যবসায়ী-শিল্পপতি থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রধান সংগঠন হিসেবে পরিচিত এই চেম্বারের নেতৃত্ব এবার প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হতে যাচ্ছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে শহরের এস এস রোডস্থ চেম্বার ভবনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
চেম্বার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সূত্র জানায়, অর্ডিনারি গ্রুপে মোট ভোটার সংখ্যা ৪৩৮ জন। এ গ্রুপের ১৭টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫২ জন প্রার্থী। অন্যদিকে অ্যাসোসিয়েট গ্রুপে ভোটার ৬৮ জন, যেখানে ৭টি পদের বিপরীতে ১১ জন প্রার্থী লড়াই করছেন।
অর্ডিনারি গ্রুপে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন। সিনিয়র ও জুনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী ৩ জন করে। ১৪টি পরিচালক পদে লড়ছেন ৪৪ জন। অ্যাসোসিয়েট গ্রুপে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ৩ জন এবং পরিচালক পদে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গ্রুপ মেম্বার পদে সাইদুর রহমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে চেম্বারের নির্বাচন না হওয়ায় হতাশা ছিল ব্যবসায়ী সমাজ। এবার ভোটের সুযোগ পেয়ে তারা অত্যন্ত উৎফুল্ল।
তারা বলেন, আগে নেতৃত্ব চাপিয়ে দেওয়া হতো। এবার আমরা নিজেরাই আমাদের নেতা বেছে নিচ্ছি। প্রচুর প্রার্থী থাকায় পুরো এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
পরিচালক প্রার্থী হাজী আব্দুস সাত্তার বলেন, দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হচ্ছে। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। নির্বাচিত হলে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করব।
সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ভিপি অমর কৃষ্ণ দাস বলেন, ১২ বছর চেম্বারের নির্বাচন হয়নি। এবার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরেছে। ব্যবসায়ীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করবো।
চেম্বারের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর ব্যবসায়ীরা ভয়ে প্রতিষ্ঠান খুলতে পারছিলেন না। তখন আমি নিরাপত্তা দিয়েছি। তাদের অনুরোধে আমি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেম্বারের দায়িত্ব নেই এবং গণতন্ত্রের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নির্বাচন আয়োজন করি। এখন ব্যবসায়ীরা আনন্দঘন পরিবেশে নেতা নির্বাচনের সুযোগ পেয়েছেন।
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, সিরাজগঞ্জ এখন সম্ভাবনাময় জেলা। রেলপথ, নৌপথ, সড়কপথ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সব সুবিধা রয়েছে। নির্বাচিত হলে ১০ তলা চেম্বার ভবন নির্মাণ করে সব ব্যবসায়ী সংগঠনকে এক ছাদের নিচে আনবো।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ইন্দ্রজিত সাহা বলেন, দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের নজির স্থাপন করছি।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সান্তু জানান, চেম্বার নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।