রাজশাহী মহানগর দায়রা জজের বাসায় ঢুকে তার ছেলেকে হত্যার ঘটনায় সারা দেশের বিচারকরা কালো ব্যাজ ধারণ করে কর্মসূচি পালন করেছেন। রোববারের (১৬ নভেম্বর) তারা কালো ব্যাজ ধারণ করেন।
এর আগে বিচারকদের কলমবিরতি কর্মসূচি থাকলেও পরে দাবি পূরণের আশ্বাসে তার স্থগিত করা হয়।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সারা দেশের বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম এবং মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের আমন্ত্রণে বিচার বিভাগের কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তাসহ অ্যাসোসিয়েশনের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাতে আইন উপদেষ্টা বিচারকদের দাবি দুটির সঙ্গে একমত পোষণ করে তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বঘোষিত কলম বিরতি কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হলো।
গত ১৪ নভেম্বর এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন গত ১৩ নভেম্বর আনুমানিক বিকাল ৪টায় রাজশাহীর বিজ্ঞ মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের (জেলা জজ) বাসভবনে দুর্বৃত্তের নৃশংস ছুরিকাঘাতে তার ছেলে তাওসিফ রহমান সুমন (১৭) নিহত এবং স্ত্রী তাসমিন নাহার গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। অ্যাসোসিয়েশন বর্বরোচিত এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের শিকার তাওসিফ রহমান সুমনের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করে।
বিবৃতিতে সারা দেশের বিচারকদের নিরাপত্তার বিষয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশের পাশাপাশি গ্রেপ্তার আসামিকে আদালতে সোপর্দ করার পূর্বেই বিধিবহির্ভূতভাবে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করার পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাসোসিয়েশন ২ দফা দাবি সরকারের কাছে পেশ করে। এর মধ্যে সব আদালত, বিচারকের বাসস্থান ও যাতায়াতের সময় অবিলম্বে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী নিযুক্ত করতে হবে।
এ ছাড়া রাজশাহীর ঘটনায় বিচারকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবহেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং গ্রেপ্তার আসামিকে আইনবহির্ভূতভাবে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে অপেশাদারি প্রদর্শনের দায়ে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বিবৃতি পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উক্ত দাবি বাস্তবায়নপূর্বক বিচারকদের কর্মের পরিবেশ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে রোববার থেকে সারা দেশের বিচারকগণ একযোগে কলমবিরতি পালন করবেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।