কোলন ক্যানসারকে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’। কারণ, এই রোগ শরীরের ভেতরে দীর্ঘদিন ধরে নিঃশব্দে বৃদ্ধি পায় কোনও বড় লক্ষণ ছাড়াই। তাই অনেকেই জানেন না অন্ত্রের ভেতরে ক্যানসার কীভাবে শুরু হয় কিংবা দেখতে কেমন হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাভিত্তিক গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. জোসেফ সালহাব তার সাম্প্রতিক এক পোস্টে দেখিয়েছেন, কীভাবে একদম ছোট পলিপ ধীরে ধীরে বিপজ্জনক টিউমারে পরিণত হয় এবং কোনও প্রাথমিক লক্ষণগুলো কখনোই উপেক্ষা করা উচিত নয়।
সুস্থ কোলন দেখতে কেমন: ডা. সালহাব প্রথমেই একটি সুস্থ কোলনের ছবি দেখান। তিনি বলেন, স্বাভাবিক কোলন সমান রঙের হয়, ভেতরের দেয়াল মসৃণ, কোথাও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা প্রদাহ থাকে না। কিন্তু ক্যানসার এভাবে হঠাৎ গজিয়ে ওঠে না। এর সূচনা ঘটে ছোট ছোট পলিপ দিয়ে।
অধিকাংশ কোলন ক্যানসারই একসময় ছোট, নিরীহ পলিপ থেকে শুরু হয়। এগুলো প্রথমে খুব ছোট হয়, কিন্তু সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে।
যেসব সমস্যা দেখা দেয়: বছরের পর বছর পলিপ বড় হতে থাকে। তখন এটি অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। ডা. সালহাব জানান, পেটব্যথা, রক্তপাত, কোষ্ঠকাঠিন্য বা হঠাৎ বারবার পায়খানা হওয়া এসবই বড় হয়ে যাওয়া পলিপের কারণে হতে পারে। কারণ এতে মলের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং কোলন ঠিকমতো খালি হতে পারে না।
অনেকেই মনে করেন ক্যানসার মানেই মনে হয় সব শেষ। এমনকি কোলন ক্যানসার হলেও মনে হয় চিকিৎসার সুযোগ নেই। এ প্রসঙ্গে ডা. সালহাব জানান ছোট অবস্থায় ধরা পড়লে এই ক্যানসার শতভাব নিরাময়যোগ্য।
তিনি বলেন, যখন এটি ছোট ও সরানো যায়, তখনই এটি সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। সরিয়ে ফেললে আর কখনোই এটি ক্যানসারে পরিণত হবে না। কোলনোস্কপির সময়ই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডাক্তাররা এসব পলিপ অপসারণ করতে পারেন। বিশেষ যন্ত্র দিয়ে কেটে পলিপ সরানোর পর ক্ষতস্থান বন্ধ করে দেয়া হয় এবং কোলন আবার আগের মতোই স্বাভাবিক হয়ে যায়।
কোলন ক্যানসার শুরু হয় অত্যন্ত সাধারণ ও ছোট পরিবর্তন দিয়ে যা বাহ্যিক কোনও লক্ষণ ছাড়াই বছরের পর বছর বাড়তে থাকে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, পঞ্চাশের পর নিয়মিত কোলনোস্কপি, পরিবারের কারো কোলন ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে আরও আগে পরীক্ষা, এবং শরীরের ছোট পরিবর্তনগুলোকেও গুরুত্ব দেয়া জরুরি। কারণ, সময়মতো ধরা পড়লে কোলন ক্যানসার সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস