লস অ্যাঞ্জেলেস ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ১০ একর থেকে ২৯০০ একরেরও বেশি ছড়িয়েছে দাবানল। পরিস্থিতি মোকাবেলায় লস অ্যাঞ্জেলেস জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
এ ঘটনায় ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। এই দাবানলের ফলে গোটা লস অ্যাঞ্জেলেস এখন চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং দমকল বাহিনী পরিস্থিতি সামলাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
দাবানলের কারণে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এয়ার ফোর্স ওয়ানের ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। তিনি কোচেল্লা ভ্যালির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করলেও তা স্থগিত করা হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, সান্তা মনিকা এবং মালিবুর মধ্যবর্তী প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় ২,৯২১ একর জমি (১,১৮২ হেক্টর) দাবানলে পুড়ে গেছে। দীর্ঘদিনের শুষ্ক আবহাওয়ার পর প্রচণ্ড বাতাস দাবানলের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।
টপাঙ্গা ক্যানিয়নের পাহাড়ি এলাকা থেকে দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে। বেশ কয়েকটি বাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে এবং অনেক বাসিন্দা তাদের গাড়ি ফেলে পায়ে হেঁটে নিরাপদ স্থানে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেস ফায়ার চিফ ক্রিস্টিন ক্রাউলি জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কোনও আহত হওয়ার খবর নেই, যা আমাদের জন্য আশার কথা। তবে ১০ হাজার বাড়ি এবং ২৫ হাজার মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
দমকলকর্মীরা সাগর থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। দেশটির টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়ি সরাতে বুলডোজার ব্যবহার করা হচ্ছে। গেটি ভিলা মিউজিয়ামের চারপাশের গাছপালা কিছুটা পুড়লেও আগেই ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার কারণে মূল্যবান শিল্পকর্ম নিরাপদ রয়েছে।
প্যাসিফিক প্যালিসেডস থেকে উপকূলীয় এলাকার দিকে একটিমাত্র প্রধান রাস্তা থাকায় যানজট চরম আকার ধারণ করেছে। সড়কে পরিত্যক্ত গাড়ির কারণে অনেক বাসিন্দা হেঁটে পালানোর চেষ্টা করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সিন্ডি ফেস্তা বলেন, আগুন এতটাই কাছে চলে এসেছিল যে মনে হচ্ছিল গাড়িগুলো মুহূর্তেই পুড়ে যাবে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির জন্য জরুরি জারি করেছে। ৫০ থেকে ৮০ মাইল প্রতি ঘণ্টা (৮০ থেকে ১৩০ কিমি প্রতি ঘণ্টা) বেগে প্রবাহিত বাতাস এবং শুষ্ক আবহাওয়া দাবানলের পরিস্থিতি আরও গুরুতর করে তুলেছে।